কাশ্মীর নামের যে ভূখন্ডকে একসময় ভূস্বর্গ নামে অভিহিত করা হত, কার্যত তা এখন ভারতের অংশ। বাকীটুকু, যার নাম আযাদ কাশ্মীর, পাকিস্তানের অংশ হতে আগ্রহী কিনা, না জেনেই বলা যায়, সব বিচারেই কাশ্মীর এখন পরাধীন। এ-কাহিনী পরাধীন-কাশ্মীরের ভারত-অংশের ভ্রমণ বৃত্তান্ত। বুলবুল সরওয়ার যখন এই ভ্রমণ-কাহিনী লিখেছেন, তখন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র। দর্শনে অনাগ্রহী পর্যটক লিখতে চেয়েছিলেন একটি পথভ্রমণ। কিন্তু তার ৩টি গল্প, ১০টি কাব্য, ১টি উপন্যাস আর ৬টি কিশোর-রচনা ছাড়িয়ে ‘ঝিলাম’ হয়ে উঠেছে বাংলা সাহিত্যের রোমান্টিক ক্ল্যাসিক। স্বাদু গদ্যে লেখা ঝিলাম এখন আর শুধু স্রোত নয়, প্রেম ও ইতিহাসের এক দায়বদ্ধতাও বটে। ১৯৯০এ প্রথম প্রকাশ পাবার পর বইটির ৫০টি মূদ্রণ নি:শ্বেষিত হয়েছে। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এ-এক অলৌকিক ঘটনা। ঢাক-ঢোল ছাড়াই ঝিলামের এই অজগরীয় পথ-চলা এবার ৫১য় পা দিল। কিমাশ্চর্যম!
বুলবুল সরওয়ার
জন্ম গোপালগঞ্জে। ১৯৬২’র ২৭শে নভেম্বর। ৯ ভাইবোনের মধ্যে কনিষ্ঠ। মিশনারি স্কুলের প্রভাবে অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা তার মজ্জাগত। পরিবারেও ছিল শিল্প-সাহিত্যের আবহ। বিশেষত বাবার প্রভাব এবং বড় তিন ভাইয়ের উৎসাহ তাকে শেষপর্যন্ত সাহিত্যেই থিতু করে দিয়েছে। লেখালেখি শুরু শৈশবে। আজাদ-ইত্তেফাক থেকে শুরু করে দেশের অধিকাংশ দৈনিক ও সাময়িকীতে লিখেছেন। কলকাতা-আসামেও সমান জনপ্রিয়। ১৯৮৯তেই ভারত থেকে প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘হিটলারের লাশ’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৬। লিখেছেন কবিতা, গল্প, শিশুসাহিত্য, পত্রকথা। অনুবাদও কম নয়; ১৫টি বিশ্বসেরা উপন্যাস। ভ্রমণে তার বিশেষ মুনশিয়ানা। জনস্বাস্থ্যের অধ্যাপক বুলবুলের প্রিয় বিষয় চিঠি, আড্ডা, কফি এবং নজরুল। স্ত্রী দিলরুবা মনোয়ার, কন্যা আয়েশা তাজিন মাশরুবা ও পুত্র আয়হান নাভিদ নওরোজকে নিয়ে বাস করেন ঢাকার শ্যামলীতে।