অনেকেই জানতে চান, মুক্তগদ্য কী? কেন এই লেখাগুলোকে মুক্তগদ্য নামে ডাকি? সত্যি বলতে কি, অন্য কোনো নাম না পেয়েই এই নামে ডাকতে শুরু করেছিলাম লেখাগুলোকে। কারণ, গল্প নয় এগুলো, যদিও গল্পের ঢঙেই লেখা; উপন্যাসও নয়, যদিও উপন্যাসের অনেক উপকরণ পাওয়া যাবে; প্রবন্ধও নয়, যদিও গঠনশৈলী দেখে সেটি মনে হতে পারে। যেহেতু ব্যক্তিগত অনেক প্রসঙ্গ আছে লেখাগুলোর ভেতরে, এগুলোকে হয়তো ব্যক্তিগত রচনাও বলা যেত; অনেক স্মৃতির কথা থাকে এ-ধরনের লেখায়, সেই অর্থে স্মৃতিগদ্যও বলা যেত; কিন্তু তাতে এদের সম্পূর্ণ রূপ ধরা পড়ে না। খানিকটা ব্যক্তিগত আলাপচারিতার ভঙ্গিতে রচিত এই লেখাগুলোতে এত ভিন্ন ভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য আছে যে একে কোনো নির্দিষ্ট নামে ডাকা যায় না। ‘মুক্ত' বলেই এর নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নেই, নির্দিষ্ট আঙ্গিকও নেই। মুক্ত সে, স্বাধীন, এবং খানিকটা স্বেচ্ছাচারীও। আর তাই এদেরকে ‘মুক্তগদ্য' নামে ডাকতেই ভালোবাসি আমি। আমার যে নিয়মিত লেখালেখি--গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ--তার থেকে এই লেখাগুলো একটু আলাদা। দলছুটই বলা যায়।
আহমাদ মোস্তফা কামাল
জন্ম ১৪ ডিসেম্বর ১৯৬৯। পড়াশোনা করেছেন পাটগ্রাম হাইস্কুল, মানিকগঞ্জ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএসসি, এমএসসি, এমফিল এবং পিএইচ.ডি। পেশাগত জীবনের শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এ কর্মরত। কিন্তু যাবতীয় বৈষয়িক সাফল্যের সম্ভাবনাকে নাকচ করে শুধুমাত্র লেখালেখিকেই তিনি জীবনের সকল স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছেন। লেখালেখির শুরু ’৯০ দশকের গোড়া থেকেই। প্রথম গল্পগ্রন্থ দ্বিতীয় মানুষ প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালে। এরপর আরো সাতটি গল্পগ্রন্থ, ছ’টি উপন্যাস এবং চারটি প্রবন্ধগ্রন্থ বেরিয়েছে। এটি তাঁর প্রথম প্রবন্ধ সংকলন। তাঁর চতুর্থ গল্পগ্রন্থ ঘরভরতি মানুষ অথবা নৈঃশব্দ্য লাভ করেছে মর্যাদাপূর্ণ ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৩’ পুরস্কার। দ্বিতীয় উপন্যাস অন্ধ জাদুকর ভূষিত হয়েছে ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার’ ২০০৯-এ, এবং তৃতীয় উপন্যাস কান্নাপর্ব ২০১২ সালের শ্র্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসেবে লাভ করেছে ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার’ ২০১৩।