সমকালীন বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্বর মুহম্মদ নুরুল হুদা। তাঁর কাব্যপ্রায়াসের কেন্দ্রে রয়েছে ব্যক্তিমানুষ, জাতিমানুষ ও বিশ্বমানুষের প্রতি সমীকৃত প্রতীতি। জাতিসত্তার কবিরূপে বহুলনন্দিত হয়েও তিনি দৈশিক ও বৈশ্বিক মানব-অস্তিত্বের নান্দনিক ভাষ্যকার। জাতিসত্তার কবি হিসাবে তিনি বৃহত্তর লোকসমাজের যাপিতজীবন, রিচ্যুয়াল ও ঐতিহ্য ঘোষণার অতলান্তিক মানস সহযাত্রী। জাতিসত্তার স্বরূপ প্রকাশ করতে গিয়ে প্রাসঙ্গিক পৌরাণিক বাস্তবতাকে কবিতার উপাদান করেছেন তিনি। বলাই বাহুল্য, এক্ষেত্রে তিনি সূক্ষ্ম পরিমিতিবোধের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন। মাটি ও মানুষের সঙ্গে রয়েছে তাঁর নিবিড় একাত্মতা। দেশ ও জাতির সমস্যা-সঙ্কট, সমসাময়িক আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক বাস্তবতার অগ্নিঝরা চিত্র হচ্ছে তাঁর কবিতা। কবিতার শরীরে সমাজ-বাস্তবতাকে আত্মীকরণ করতে গিয়ে মুহম্মদ নূরুল হুদা তাঁর অনুভূতির প্রগাঢ় আলিঙ্গনে নিজস্ব চিন্তাশক্তিকে সূত্রায়িত করেন শিল্পিত অভীপ্সায়। এখানেই নিহিত জাতিসত্তার কবি হিসাবে তার নান্দনিক অনন্যতা।
গাউসুর রহমান
কবি, প্রাবন্ধিক-গবেষক, কলামিস্ট, কথাসাহিত্যিক হিসেবে গাউসুর রহমান স্ব-চিহ্নিত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। কবি হিসেবে তিনি নিজস্ব চড়বঃরপ ফরপঃরড়হ অর্জনের জন্যে সচেষ্ট। নতুন কণ্ঠস্বরের অধিকারী এই কবি প্রাবন্ধিক-গবেষক হিসেবে তুখোড় মেধাবী; তাঁর বিশ্লেষণ অনবদ্য। নজরুল, জসীমউদ্দীন, ফররুখ আহমদ, শামসুর রাহমান সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব গ্রন্থ রয়েছে। নজরুল সম্পর্কে তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা চার। আরও দুটি প্রকাশের অপেক্ষায়। রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ সম্পর্কে দুটি গ্রন্থ যন্ত্রস্থ। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা বিশ। অ্যাডর্ন প্রকাশিত তাঁর উল্লেখযোগ্য দুটি গ্রন্থ হল, জাতিসত্তার কবি : মুহম্মদ নূরুল হুদা ও কবিতার শামসুর রাহমান। অধ্যাপনায় নিয়োজিত গাউসুর রহমান বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ এমএ; পরবর্তী সময়ে তিনি এলএলবি ডিগ্রিও অর্জন করেছেন। পিতা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান ও সুগৃহিণী মা হোসনে আরা বেগমের জ্যেষ্ঠপুত্র গাউসুর রহমান। স্ত্রী কামরুন নাহার ও পুত্র সুহৃদ রহমানকে নিয়ে ময়মনসিংহ শহরে তিনি বসবাস করেন।