ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ মির্জা গালিব উপমহাদেশের একজন শক্তিশালী কবি। তাঁর জীবন নানা বৈচিত্র্য ভরপুর। ইতিহাসের ক্রান্তিকালের এই মানুষকে নিয়ে রচিত ‘যমুনা নদীর মুশায়রা’ পাঠকের এক ধরনের তৃষ্ণা মেটাবে। তাঁরা এই উপন্যাসে পাবেন ইতিহাসের সঙ্গে সাহিত্যের যোগ। পাবেন সাহিত্যের সেই শিল্পকে, যে শিল্পকাহিনীর ভেতরে মানুষের আবেগের জায়গার শক্ত বাঁধুনী।
কবি গালিবকে নিয়ে নানা ধরনের বই রচিত হয়েছে। তিনি দেশ-বিদেশের অসংখ্য গবেষকের বিষয় হয়েছেন। তাঁকে নিয়ে সৃজনশীল মানুষ রচনা করেছেন কবিতা। কারণ তাঁর জীবনদর্শনের নানাদিক আকৃষ্ট করেছে নানাজনকে নানাভাবে।
আবু সয়ীদ আইয়ুব বলেছেন, ‘গালিব উর্দু ভাষার দুরুহতম কবি’। তিনি গালিবের উদ্ধৃতি দিয়েছেন ধর্ম সম্পর্কে। গালিব বলেছেন, ‘আমি একেশ্বরবাদী, সর্বপ্রকার আচার-অনুষ্ঠান বর্জন করাই আমার নীতি। ধর্ম সম্প্রদায়গুলি লুপ্ত হলে সত্য ধর্মের উপাদান হয়ে যাবে।’ গালিবের অনুপুঙ্খ নানা বিবরণ একজন অসাধারণ শক্তিশালী কবির মানস-দর্শন প্রতিফলিত করে।
বিষয়-বৈচিত্র্যের জন্য পাঠকের আকাঙ্ক্ষা এই উপন্যাসে পূরণ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
সেলিনা হোসেন
সেলিনা হোসেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক, যিনি ১৪ জুন ১৯৪৭ তারিখে রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এ কে মোশাররফ হোসেন ছিলেন রেশমশিল্প কারখানার পরিচালক এবং মাতা মরিয়মন্নেসা বকুল। ষাটের দশকের মধ্যভাগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময়ে লেখালেখির শুরু করেন এবং তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ "উৎস" ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হয়। সেলিনা হোসেনের লেখালেখির কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশের মানুষ, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য, এবং তিনি বাংলার লোক-পুরাণের চরিত্রসমূহকে নতুনভাবে তুলে এনেছেন। তাঁর উপন্যাসে সমকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকট, ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ প্রতিফলিত হয়েছে। সাহিত্যে তাঁর পরিচিতি শুধু কথাসাহিত্যেই সীমাবদ্ধ নয়, প্রবন্ধেও তিনি শক্তিশালী ও শাণিত গদ্য নির্মাণে দক্ষ।