‘হেথা নয় হোথা অন্য কোথা...’ কথাটি রবীন্দ্রনাথের। আর এই ‘অন্য কোথাটা’ই লেখকের প্রিয় বিভুঁই ইতালি। ইতালি যেন এক নস্টালজিয়া। ইতালি মানেই ঐতিহ্য ও আধুনিকতার এক অভিন্ন লীলাভূমি । ইতালি মানে নয়নাভিরাম পুরাতাত্ত্বিক আর ঐতিহাসিক নিদর্শনের স্বপ্নের দেশ । ইতালি মানেই রেনেসাঁর তীর্থভূমি। পিসার হেলানো মিনার, কলোসিয়াম, সিস্টিন চ্যাপেল, গ্রামসি, দান্তে, মাইকেল এ্যাঞ্জেলো, ভেনিস, টাম্বুরেল্লা বিয়েরভেনুটো, উফ্ফিজি গ্যালারি, আসিসি আর কত কী! আরও আছে স্প্যাঘেটি, পিজ্জা। আছে ও সোলো মিও। হাসনাত আবদুল হাই ইতালি গিয়েছেন কয়েকবার কখনও কর্মসূত্রে কখনও পর্যটনে। মুগ্ধদৃষ্টিতে উপভোগ করেছেন ইতালির নয়নাভিরাম সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। শিল্প -সাহিত্য-সংস্কৃতির কালজয়ী স্থানগুলো ঘুরেফিরে দেখেছেন আবার পরিচয় পেয়েছেন অভিবাসীদের জীবনের সুখদুঃখের। সর্বশেষ পা রেখেছিলেন ২০১২ সালে শুধুই পর্যটক হিসেবে। এবার তাই ইতালিকে নিয়ে কলম ধরে বইয়ের পাতায় ছড়িয়ে দিয়েছেন। আর পাঠকে সামনে ইতালির অনেক জানা-অজানা চমকপ্রদ ঘটনা এই অবসরে উপস্থাপন করেছেন। ইতালিকে জানতে বুঝতে হলে গেলে এই বইটি হবে পাথেয়স্বরূপ। ভ্রমণপিপাসুদের পক্ষে বইটি যথেষ্ট তথ্য যোগাবে।
হাসনাত আবদুল হাই
হাসনাত আবদুল হাই-এর জন্ম ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরে, কলকাতায়। পৈত্রিক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার সৈয়দাবাদ গ্রামে। স্কুল শিক্ষা কলকাতা, যশাের, ফরিদপুর শহরে । কলেজ শিক্ষা ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অব ইকনােমিকস্ এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষা লাভের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা। ১৯৬৫ সালে সিভিল সার্ভিসে যােগদানের পর প্রাক্তন পাকিস্তান সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং সচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। হাসনাত আবদুল হাই ছাত্র জীবন থেকে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন ১৯৫৮ সালে ছােটগল্প রচনার মাধ্যমে। ছােটগল্প, উপন্যাস, ভ্রমণ-কাহিনী, শিল্প ও সাহিত্য সমালােচনা এবং নাটক এই সব শাখায় স্বচ্ছন্দে বিচরণ করেছেন চার দশকের অধিককাল। বাংলা এবং ইংরেজিতে একটি কবিতার বই লিখেছেন জাপানে প্রবাস জীবনে। প্রকাশিত ছােটগল্প গ্রন্থের সংখ্যা পাঁচ, উপন্যাস পঁচিশ এবং ভ্রমণ-কাহিনী ছয়। সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন অলক্ত পুরস্কার, মােহাম্মদ আকরম খাঁ পুরস্কার, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন পুরস্কার, বাংলা একাডেমী পুরস্কার এবং একুশে পদক।