ইসলামী ব্যাংকিং মানে কল্যাণমুখী ব্যাংকিং ব্যবস্থা। ইসলামী ব্যাংকগুলো দেশের আর্থিক খাতে যে কল্যাণমুখী ধারা তৈরি করেছে, তা আরো বেগবান হওয়া দরকার। আমাদের দেশে বর্তমানে ১০টি ব্যাংক ইসলামী নীতির আলোকে অর্থব্যবস্থাপনার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইসলামী ব্যাংকিং পরিচালনার ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকিং জ্ঞানসম্পন্ন, অভিজ্ঞ ও দক্ষ জনশক্তির যেমন অভাব রয়েছে তেমনি ইসলামী ব্যাংকিং সম্পর্কে অধিকাংশ গ্রাহকের জ্ঞান খুবই অপ্রতুল বলা চলে। একজন ইসলামী ব্যাংকার হিসেবে
১) গ্রাহকদের সাথে আচরণ কেমন হবে,
২) জনশক্তি পরিচালনায় কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা,
৩) টিম স্পিরিটের ভুমিকা,
৪) ইসলামী ব্যাংকিং বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করার শর্তাদি,
৫) ইসলামী ব্যাংকিং বিনিয়োগ কার্যক্রমে শরী‘আহ্ পরিপালনের পন্থাসমূহ,
৬) ইসলামী ব্যাংকিং বাস্তবায়নের পথে সমস্যা ও সমাধানের উপায় প্রভৃতি বিষয় জানা খুবই জরুরি।
তেমনিভাবে ইসলামী ব্যাংকিং করতে আগ্রহী একজন গ্রাহকেরও জানা থাকা দরকার যে,
১) ইসলামী ব্যাংকসমূহে টাকা রেখে লাভ নেয়া যাবে কিনা,
২) ইসলামী ব্যাংকগুলো কীভাবে বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে,
২) ইসলামী ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ কার্যক্রমে কীভাবে শরী‘আহ পরিপালন করে প্রভৃতি।
এসব বিষয়ে লেখা প্রবন্ধমালা নিয়ে বইটি সাজানো হয়েছে। প্রতিটি প্রবন্ধ নির্ভরযোগ্য রেফারেন্স সহ খুব সাবলীলভাবে লেখা হয়েছে, যা পাঠে ব্যাংকার ও পাঠক উভয়শ্রেণিই ইসলামী ব্যাংকিংয়ের অনেক বিষয়ে পরিস্কার ধারনা লাভ করতে পারবেন।
ড. হাসান আলী
ড. হাসান আলী
ডাকনাম-রুবেল। জন্ম ১৯৮২ সালের ২১ আগস্ট। জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলাধীন পূর্ণ গোপীনাথপুর গ্রামে। বাবা মো. মুসা খলিফা, আর মা মোছা. আলেয়া বিবি। মা-বাবার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের সংসারে তার অবস্থান তৃতীয়। নিজ গ্রামেই কাটে তার শৈশব ও কৈশোর জীবন।
তিনি ২০০০ সালে দাখিল ও ২০০২ সালে আলিম পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগ থেকে ২০০৬ সালে বিএ (অনার্স) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দশম এবং ২০০৭ সালে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে পঞ্চম স্থান অধিকার করেন। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) এর ‘এ্যাকাউন্টিং এ্যান্ড ফিন্যান্স’ বিভাগ থেকে ২০১৮ সালে এমবিএ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে ২০২৩ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি সরকারী মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা থেকে প্রথম শ্রেণিতে ফাযিল ও কামিল (তাফসীর) ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট থেকে ‘ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কোর্স’ সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলএল.বি কোর্সের শেষবর্ষে অধ্যয়নরত আছেন।
২০০৮ সালে সাংবাদিকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ‘মাই টিভি’র বার্তা বিভাগে রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অত:পর ২০১০ সালে ‘প্রবেশনারি অফিসার’ এবং ২০১২ সালে ‘সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার’ পদে যোগদান করেন আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে। বর্তমানে তিনি ব্যাংকটির জামগড়া শাখায় ‘প্রিন্সিপাল অফিসার (ম্যানেজার অপারেশন) পদে কর্মরত আছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। স্ত্রী তামান্না মাহবুবা, কামিল (হাদীস)। তার রয়েছে দুই পুত্র সন্তান। কে. এম তানঈম হাসান রাফিদ (১০)। কে. এম তাসকীন হাসান রাকীন (৩)।
কর্মব্যস্ততার মাঝে নিত্যদিনের বেশিরভাগ সময় কাটে তার। এর মাঝে যেটুকু ফুরসত পান পুরোটাই গবেষণা, বই পড়া, লেখালেখি আর পরিবারকে নিয়ে কাটান। লেখালেখির প্রতি রয়েছে তার দুর্বার আকর্ষণ। তিনি নিয়মিত ইসলামী ভাবধারার ছড়া, কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন। তবে ইসলামী সাহিত্যের সকল শাখায় কাজ করার অদম্য ইচ্ছা রয়েছে তার। তিনি নিজে স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। ভালোবাসেন পাঠকদেরও স্বপ্ন দেখাতে। তার ২টি প্রবন্ধ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গবেষণা পত্রিকায় এবং ১টি প্রবন্ধ কলা অনুষদের গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো ইসলামী ভাবধারার ছন্দ কবিতার বই 'আকাঙ্ক্ষা' (২০২৩) ‘মুসাফির’ (২০২৩), ছোটোদের জন্য ইসলামী ভাবধারার ছড়ার বই ‘ইলমা’ (২০২৩) আল-কুরআনের ত্রিশতম পারার কাব্যরূপ 'ছন্দে ছন্দে কুরআন বুঝি’ (২০২৩) এবং প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘ইসলামী ব্যাংকিং ভাবনা’ (২০২৩)।