মার্কিন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ব্রুস রিডেলের ভাষ্যমতে, পাকিস্তানের প্রধান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-র উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে জানার জন্য বইটি বেশ চমৎকার। কার্যত নামহীন ও স্বল্পসংখ্যক কর্মীবিশিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা থেকে বিশ্বের অন্যতম আধুনিক ও সেরা গোয়েন্দা সংস্থায় পরিণত হয়েছে আইএসআই।
এজেন্সির বহুমুখী দিক, বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনা এবং পর্দার আড়ালে থাকা ঘটনা ও চিন্তাধারা প্রকাশ পেয়েছে গ্রন্থকারের অনুসন্ধানী রচনায়।
এছাড়াও বইটিতে আইএসআই সম্পর্কে ভুল ধারণা, কর্মক্ষম বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিকভাবে অনুসন্ধান করা প্রশ্নের যুক্তিযুক্ত জবাব, গোপন ও অস্পষ্ট অপারেশনসমূহের বর্ণনাও আছে- যে অপারেশনগুলোতে আইএসআই জড়িত ছিল ।
ISI : পাকিস্তানের ভেতর আরেক পাকিস্তান সিআইএ, RAW, সাভাক, কেজিবি ও অন্যান্য প্রমুখ ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সাথে আইএসআই-র সম্পর্কের উপরও আলোকপাত করেছে; আর সন্ত্রাসী উপাদান ও সন্ত্রাসী সংগঠনের ব্যাপারে বলাই বাহুল্য। বইটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও বিভিন্ন প্রদেশে আইএসআই-র প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তারের বিষয়টিও তুলে ধরেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৎকালীন Deputy Chief of Staff ব্রিটিশ অফিসার মেজর জেনারেল রবার্ট কাউথর্ন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের Inter-Services Intelligence (ISI) বছরের পর বছর ধরে অনুন্নত ও অখ্যাত সংস্থা ছিল। উল্লেখ্য, ১৯৪৭-৪৮ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আইএসআই গঠিত
হয়। ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত যুদ্ধের সময় সংস্থাটির ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব অনুভূত হয়েছিল কারণ সংস্থাটি মুজাহিদিন প্রতিরোধকে সমর্থন করার জন্য সিআইএ-র সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করেছিল। কিন্তু সংস্থাটির কার্যক্রম সংবাদ মাধ্যমে কভারেজ পায়নি বললেই চলে।
এরপর থেকে ১৯৮৮ সালে আইএসআইয়ের ভারতীয় কাশ্মীরে জড়িত থাকার বিষয়টি ক্রমবর্ধমান তদন্তের আওতায় আসে এবং ১৯৯৫ সাল নাগাদ আফগানি তালেবানকে আইএসআইয়ের তরফ থেকে পরামর্শ দেওয়ার বিষয়টিও ভালোভাবে প্রমাণিত হয়েছিল। কিন্তু আল কায়েদার সাথে সংস্থাটির কথিত যোগসূত্র এবং
পাকিস্তানের সামরিক অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র অ্যাবোটাবাদে উসামা বিন লাদেনকে আবিষ্কার যা সত্যিই আইএসআই-কে স্পটলাইটের নিচে নিয়ে আসে। ১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় আইএসআইয়ের ভূমিকা এবং আবদুল কাদির খানের সাথে আইএসআইয়ের যোগসূত্রসহ নানান বিতর্ক আইএসআই-কে
হতাশায় ডুবিয়েছিল। অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম ও মুখ্য ব্যক্তিদের প্রগাঢ় জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এজেন্সি হিসেবে আইএসআই সম্পর্কে নতুন অন্তর্দৃষ্টি দেওয়াই হলো এই বইয়ের মূল লক্ষ্য। এই চমকপ্রদ বইটি পাকিস্তানের সিক্রেট সার্ভিসের এতদিনের রহস্যময় জগতকে