'ইবনুল কাইয়্যিম বলেন, ইবাদতের ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহ -রই উদ্দেশ্য থাকার নাম ইখলাস। [মাদারিজুস সালিকীন : ২/৯১] জুরজানী বলেন, মানবাত্মার পরিচ্ছন্নতা ও স্বচ্ছতার পরিপন্থী যাবতীয় দোষ-ত্রুটি ও ময়লা-আবর্জনা থেকে অন্তর খালি করাকেই ইখলাস বলে। আর এর মূলকথা হচ্ছে, প্রতিটি বস্তুর ক্ষেত্রেই এ কথা ভাবা যায় যে, তার সাথে অন্যকোনো বস্তুর সংমিশ্রণ থাকতে পারে। তবে যখনই কোনো বস্তু অন্য কিছুর সংমিশ্রণ থেকে মুক্ত হয়, তখন তাকে খালেস বা খাঁটি বস্তু বলা হয়। বলা হয় বস্তুটি পরিশুদ্ধ। আর এ খাঁটি ও পরিশুদ্ধ করার কাজটি সম্পাদন করার নাম হচ্ছে ইখলাস। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন আর নিশ্চয় গবাদি পশুর মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা। তার পেটের ভেতরের গোবর ও রক্তের মধ্যখান থেকে আমি তোমাদের দুধ পান করাই; যা খাঁটি এবং পানকারীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যকর। [সূরা নাহল, আয়াত নং ৬৬] এখানে দুধ খাঁটি হওয়ার অর্থ হচ্ছে, তার মধ্যে রক্ত ও গোবর ইত্যাদির কোনো প্রকার সংমিশ্রণ না থাকা। [আত-তা‘রীফাত : ২৮] কেউ কেউ বলেন, ইখলাস হচ্ছে আমলসমূহকে যাবতীয় ময়লা-আবর্জনা ও দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত ও নির্ভেজাল করা। [আত-তা‘রীফাত : ২৮] কেউ কেউ বলেন, অন্তরকে একমাত্র আল্লাহ -র জন্য খালি করা। অর্থাৎ তিনি ব্যতীত অন্য কারও জন্য কোনো ব্যস্ততা না রাখা। [মাকাসিদুল মুকাল্লিফীন : ৩৫৮] হুযাইফা আল-মারআশী বলেন, ইখলাস হচ্ছে প্রকাশ্য ও গোপন উভয় অবস্থাতেই বান্দার ইবাদত-আনুগত্য এক রকম হওয়া। [আত-তিবয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন : ১৩] আবার কেউ কেউ বলেন, ইখলাস হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে স্বীয় আমলের উপর সাক্ষী হিসেবে তালাশ না করা, [লৌকিকতা ও অন্যকে নিজের আমল দেখানোর মানসিকতা পরিহার করা] এবং প্রতিদানদাতা হিসেবেও কেবল তাঁকেই গ্রহণ করা। [মাদারিজুস সালিকীন : ২/৯২]'