হিউম্যান বার্গার অ্যান্ড ব্লাড ক্যাফে (হার্ডকভার)

‘উই আর কামিং! ইউর ডেথ ইজ ইম্মিনেন্ট, এইদ্যার বাই আস অর সামওয়ান এলস’।

শরীর থেকে মাথাটা আলাদা তা একেবারেই মনে হচ্ছে না। চোখ জোড়া যেন এখনো তাকিয়ে আছে প্রেমিকার দিকে। মৃত প্রেমিকের চোখ কি তবে প্রেমিকাকেই খুঁজে!
প্রেমিকের রক্তাক্ত মাথাটা নিজের ওড়না দিয়ে মুড়িয়ে নিল সে। রক্তিম চোখে একবার তাকালো দূরের সেই পিশাচদের দিকে।  তারা ভিড় করে আছে দূরে অন্য দেহকে ঘিরে।  
ঝাপসা চোখে হাতড়াতে হাতড়াতে দাদী একবার বলে উঠল, ‘আমার চশমাটা কই? কেউ পেলো কি?’ 
রাগান্বিত চোখে সে দাদীর দিকে তাকালো। রক্তে মাখা চশমাটা এগিয়ে দিল দাদীর হাতে। প্রেমিকের মৃত্যুতে তার চোখে জল নেই। এর চেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার আর কী হতে পারে! 
চশমাটার দিকে তাকাতে তাকাতে সে ভাবলো, চশমাটার জন্যই তার প্রেমিক ফিরে এসেছিল কিন্তু তা নিয়ে সে আর ফেরত যেতে পারল না’। তার ইচ্ছা করছিল চশমাটা কেড়ে নিয়ে ফেলে পায়ে গুড়িয়ে দিতে। কিন্তু তা সে করল না।
'দাদী চলো যাই’।
চোখে চশমা লাগিয়ে ভালোভাবে তাকাতেই দেখল নিজের নাতনি সামন দাঁড়িয়ে।
‘লিলি তুই!’, কাঁপা কন্ঠে অবাক হয়ে বলল দাদী। 
লিলির হাতে মুখে রক্ত। সেই রক্ত দেখে দাদী হন্তদন্ত হয়ে পড়ে।
‘একি হাল হয়েছে তোর!’
লিলি কিছু বলল না। দাদী এদিক ওদিক ফিরে তাকালো। ছিন্নভিন্ন একটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করে উঠল।
আর সেই চিৎকারের শব্দ গিয়ে পৌঁছালো পিশাচের ভিড়ে।
তারা থমকে গেল। পেছন ফিরে তাকালো। আর মুহুর্তেই ছুটে আসতে শুরু করল এইদিকটায়।
‘দাদী চলো’, হাত ধরে টানতে টানতে বললো লিলি।
‘এরা কারা? কেন এভাবে ছুটে আসছে?’
‘দাদী সেইসব পড়ে, চলো বলছি’।
এসবের মধ্যে দিয়ে লিলিকে একবারের জন্যও আহত মনে হল না। যেন সে পাথর হয়ে আছে। পাষণ্ডের মত নিজের প্রেমিকের দেহটা ফেলে ছুটে যাচ্ছিল সে। তাহলে প্রেমিকের মাথাটা সাথে নেবার অনুভূতিটুকু কোথা থেকে পেল সে?
লিলির সাথে সাথে বৃদ্ধা অপরিপক্ক পায়ের মত অনিশ্চিত পা ফেলে এগুচ্ছে দ্রুত। দুলছে লিলির হাতে থাকা ওড়না দিয়ে বানানো ঝোলা। তা থেকে অনবরত রক্তের ফোটা পড়ছে শুকিয়ে আসা ঝর্ণার শেষ জলের মত করে। 
লিলি ছুটছে, প্রেমিকের মাথা তার হাতে দুলছে। 
রক্তের ফোটায় দিয়ে পিচঢালায় যেন নিশানা। সেই নিশানা ধরে ছুটে আসছে পিশাচেরা।