‘হয়তো' নামের এই পৃথিবীটা খুব বিচিত্র। এখানে একই চেহারার মানুষ ঘুরে বেড়ায় অনেকজন। কেউ এক চোখে দেখে অতীত তো অন্য চোখে ভবিষ্যৎ। ঘন ঘন মৃত্যুর স্বাদ পেয়ে যায় কেউ। জড়বস্তুরও যে প্রাণ আছে সে কথা লেখা থাকে দেয়ালে দেয়ালে। আর অদ্ভুতভাবে মিলনাত্মক গল্প পরিণতি পায় শ্যাওলা ও শূন্যতার আঁশটে গন্ধে। এসব গল্প বিশ্বাস করতে নেই। তবে কোনো কিছু অবিশ্বাস করার জন্য আগে তা জানাটা অত্যন্ত জরুরি।
মাহরীন ফেরদৌসের নির্মিত গল্পগুলো আধুনিক। স্বতঃস্ফূর্ত ভাষাশক্তিতে পূর্ণ। তবে সেখানে গড়পড়তা আনন্দের চেয়ে সূক্ষ্ম বিষাদ ও গাঢ় শূন্যতা প্রবল। প্রতিটি স্বতন্ত্র গল্প যেন মানুষের অভ্যন্তরের বেদনা প্রকাশের মুক্তি দিয়ে জড়ানো। যেখানে একই সাথে বসবাস করছে ভয়, দ্বিধা, অপরাধ, প্রেম, ভুল ও_ প্রায়শ্চিত্ত। যেন মুহূর্তে মুহূর্তে বদলে যাওয়া পৃথিবীর দমকা বাতাস এসে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে একদল মানুষকে। গল্পপাঠ যেসব চিন্তাশীল পাঠকের জীবনচর্চার অংশ, যারা নতুনতর ভাবনায় আক্রান্ত হতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য মাহরীন ফেরদৌস রচিত বিশেষ সংযোজন 'হয়তো বলে কিছু আছে'।
মাহরীন ফেরদৌস
মাহরীন ফেরদৌস, সাহিত্য চর্চার সাথে জড়িত আছেন ২০১০ সাল থেকে। বেশ কিছু বছর ‘একুয়া রেজিয়া’ নামের আড়ালে থেকেই প্রকাশ করেছেন নিজের গল্প, উপন্যাস। পেয়েছেন পাঠক-প্রিয়তা। ব্যবসায় শিক্ষা এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি নিয়ে পড়ালেখা করলেও বারবারই ফিরে এসেছেন সাহিত্যের কাছে। লিখেছেন গল্প, উপন্যাস, ফিচার ও ভ্রমণ। বর্তমানে আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাসে। প্রকাশিত ছয়টি বইয়ের মধ্যে গল্পগ্রন্থ তিনটি ‘নগরের বিস্মৃত আঁধারে’, ‘কাকতাড়ুয়ার আকাশ’ ও ‘গল্পগুলো বাড়ি গেছে’। উপন্যাসও তিনটি, ‘কিছু বিষাদ হোক পাখি’, ‘এই শহরে মেঘেরা একা’ ও ‘মনোসরণি’। ‘কাচবন্দি সিম্ফনি’ ২০১৯ এর বইমেলায় প্রকাশিত হতে যাওয়া নতুন গল্পগ্রন্থ, যার সুরেলা শব্দমালা হয়তো পাঠক মনে মোহময় সিম্ফনি এনে দিবে।