হামাস : ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলনের ভেতর-বাহির (হার্ডকভার)
হামাস নামটির প্রতি আমাদের সকলেরই এক ধরনের ভালোবাসা আছে। বছরের পর বছর ফিলিস্তিনের এই যোদ্ধারা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে নিজেদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করে চলেছে ইজরাইলের জুলুম থেকে। কিন্তু হামাস সম্পর্কে জানার জন্য বাংলা ভাষাভাষীদের তেমন কোনো সুযোগ এতোদিন ছিল না। হামাস ঃ ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলনের ভেতর-বাহির বইটি সেই সুযোগটি আমাদের করে দিয়েছে। হামাস ও ফিলিস্তিনের উপর ইজরাইলের অত্যাচার আর জুলুমের একটি দলিল এই বইটি।
হামাস গতানুগতিক কোনো সংগঠন নয়। আপনি সাধারণ ১০টা সংস্থা বা সংগঠনের সাথে হামাসকে মেলাতে পারবেন না। তারা নিছক ক্ষমতায় যাওয়া বা ক্ষমতাকে ধরে রাখার রাজনীতি করে না। তারা একটি মুক্তি আন্দোলন করে। হামাস একটি স্বাধীনতা আন্দোলনের নাম। হামাস ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করতে চায়। আরো স্পষ্ট করে বললে, ইসলামের পবিত্রতম মসজিদ, আমাদের প্রথম কেবলা বায়তুল মুকাদ্দাসকে হামাস মুক্ত করতে চায়। মূলত হামাস আমাদের রক্তের সাথে, আমাদের মননের সাথে, আমাদের চেতনার সাথে সম্পৃক্ত একটি ইস্যু নিয়ে কাজ করে। একটি দলের উত্থান-পতন তাও ভিন্ন কোনো দেশের- হয়তো সকলের জন্য প্রয়োজনীয় নয়। কিন্তু যদি ভাবেন, হামাসকে জানার মাধ্যমে বায়তুল মুকাদ্দাসকে মুক্ত করার জন্য একদল মানুষের প্রচেষ্টাকে জানবেন- তাহলে বইটি পড়তে পারেন। একটি আদর্শিক দল, খুব ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নামলেও তাকে কত ধরনের ঝড়-ঝাপটা মোকাবেলা করে টিকে থাকতে হয়, কত ধরনের কৌশল নিতে হয়, পশ্চিমা অপপ্রচার, জায়নবাদীদের আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র এবং নিজেদের মধ্যকার অন্তর্ঘাতকে মোকাবেলা করে কীভাবে একটি দলকে কাজ করতে হয়- এ বইটি আপনাকে তা জানাবে। যারা নিজেদের দু:খ, কষ্ট, জেল, জুলুম, মুল্যায়ন- অবমুল্যায়ন, ক্যারিয়ারের উত্থান পতন নিয়ে অনেক বেশি পেরেশানিতে আছেন, তারা হামাস পড়তে পারেন। গোটা জীবনটাকে কীভাবে দেশের জন্য, প্রাণপ্রিয় সংগঠনের জন্য বিলিয়ে দিতে হয় হামাস বইটি তা জানাবে। শহীদি মৃত্যু যাদের একমাত্র বাসনা কিংবা ২০ বছর/২৩ বছর ধরে জেল খানায় কাটিয়ে যারা দল পরিচালনা করেন- তাদের মন-মানসিকতা কেমন হয়, তা জানার জন্য হামাস পড়তে পারেন। বাংলা ভাষায় হামাসের ওপর এর আগে কোনো বই রচিত হয়নি। তাই নতুন এক ইতিহাসের সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য হামাস পড়তে পারেন।
বইঃ হামাস বিশ্বব্যাপী পরিচিত এক মুক্তি আন্দোলনের নাম। হামাসের চোখ দিয়ে সারা পৃথিবীর মুসলমানরা আল-কুদস মুক্তির স্বপ্ন দেখে। জাতির বেইমান বড়ো একটা অংশ যখন জায়োনবাদীদের সঙ্গে গোপন সমঝোতা ও আপসকামিতায় ব্যস্ত, ঠিক তখনই ঈমানি চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দুরন্ত সাহসে গর্জে উঠে আমৃত্যু লড়াকু হামাস যোদ্ধারা।
শেখ আহমাদ ইয়াসিন, আব্দুল আজীজ রানতিসি, সালিহ শাহাদাহ, মুসা আবু মারজুক, খালিদ মিশাল, ইসমাইল হানিয়া কিংবা ইয়াহিয়া সিনওয়ার। জি উপরের নামগুলো কারো চেনার কথা নয়। কারন তারা হলিউডের কোনো সুপারস্টার নয়, না তারা বিখ্যাত ফুটবলার। কিন্তু এই নামগুলো ফিলিস্তিনবাসীদের নিকট শ্রদ্ধার মহানায়ক। কারন এনারা ছিলেন ফিলিস্তিন মুক্তি সংগঠন হামাস এর নেতাবৃন্দ। যাদের অনেকে শহীদ হয়েছেন ফিলিস্তিন মুক্তির জন্য, অনেকে ইসরাইলে জেল খেটেছেন অথবা এখনও যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। উনারা চোখের সামনে দেখেছেন নিজের সহকর্মীর মৃত্যু, ত্যাগ করেছেন পার্থিব সুখ। লক্ষ্য একটাই পবিত্র ভূমি বাইতুল মুকাদ্দাস এবং ফিলিস্তিনদের মুক্তি ও জায়োনিজম নির্মূল। বইটি পড়ে দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান অনেক ঘটনায় পাঠকবৃন্দ কখনো অশ্রুসিক্ত হবেন, কখনো রিক্ত হবেন, কখনো-বা শিহরণ জাগবে রক্তকণিকায়।