একদিকে তো গুনাহের তুফান বইছে। দীনদারদের জন্য পৃথিবীর পরিবেশ জটিলতর হচ্ছে। অন্যদিকে আমাদের পাপাচারের ফলে দরিদ্রতা, দুর্ভিক্ষ, খুনখারাবি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ বহুমুখী লাঞ্ছনা মুসলমানদের উপর জেঁকে বসেছে। সংশোধনের সার্বিক প্রক্রিয়া অরণ্যে রোদন পরিদৃষ্ট হচ্ছে। এসবের মূল কারণ হলো মানুষ গুনাহকে গুনাহ জেনেও প্রবৃত্তির সামান্য চাওয়া পরিত্যাগ করতে প্রস্তুত নয়। তবে মাশাআল্লাহ, কিছু কিছু আল্লাহর বান্দা এ ব্যাপারে আন্তরিক ও যত্নবান রয়েছেন।
.
এমন বহু গুনাহ আছে, যেগুলো আমরা নিছক উদাসীনতা ও মূর্খতাবশত করে ফেলি, যাতে দুনিয়াবিও কোনো ফায়দা নেই আর তা ত্যাগ করলে কোনোপ্রকার কষ্ট ও অসুবিধা নেই। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন শুধু মুসলমানদের এসব গুনাহ সম্পর্কে অবগত করা আর তা ত্যাগ করার জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা। এ পুস্তিকায় এ ধরনের অহেতুক ও বেফায়দা গুনাহেরই তালিকা এবং তার সাথে সাথে এসব গুনাহের কারণে ভয়াবহ বিপদ ও আজাবের কথা আলোচনা করা হলো, যেন মুসলমান কমপক্ষে এসব গুনাহ থেকে বাঁচতে পারে। সব ধরনের গুনাহ থেকে বাঁচতে না পারলেও কমপক্ষে গুনাহের পরিমাণ তো কমতে থাকবে। আর এটা অসম্ভব নয় যে এসব গুনাহ ত্যাগ করার কারণে অন্যান্য গুনাহ ত্যাগ করার সাহস ও তাওফিকও লাভ হবে। পাশাপাশি এ পুস্তিকায় দু-ধরনের গুনাহের আলোচনা করা হয়েছে:
এক. যেসব গুনাহে অনুভূতিহীন ও রুচিহীন মানুষও স্বাদ পায় না। আনন্দ পায় না। দুই. যেসব গুনাহে বাস্তবিকই কোনো স্বাদ ও আনন্দ নেই এবং তা ত্যাগ করলেও পার্থিব কোনো প্রয়োজন ও চাওয়াপাওয়ার ক্ষতি হয় না। কিন্তু কিছু কিছু বিকৃত রুচির মানুষ তাতে স্বাদ-আনন্দ খুঁজে পায়। আকর্ষণ অনুভব করে।
.
এ পুস্তিকায় উপরোক্ত উভয় প্রকার গুনাহের আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে এসব গুনাহ থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুন।
শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তাকী উসমানী
বিচারপতি মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী (জন্ম: ১৯৪৩) পাকিস্তানের একজন প্রখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তিনি হাদীস,ইসলামী ফিকহ,তাসাউফ ও অর্থনীতিতে বিশেষজ্ঞ। তিনি বর্তমানে ইসলামী অর্থনীতিতে সক্রিয় ব্যক্তিদের অন্যতম। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শরীয়াহ আদালতের এবং ১৯৮২ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের শরীয়াহ আপিল বেঞ্চের বিচারক ছিলেন। তিনি ইসলামী ফিকহ্ ,হাদিস, অর্থনীতি এবং তাসাউউফ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ। তিনি বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ “মাআরিফুল কোরআন” এর রচয়িতা মুফতি শফী উসমানীর সন্তান এবং বিখ্যাত দুই ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা রফী উসমানী ও মাওলানা ওয়ালী রাজীর ভাই।