গুড প্যারেন্টিং সন্তান প্রতিপালনে সফল হওয়ার উপায় (হার্ডকভার)
বইয়ের নাম: গুড প্যারেন্টিং (সন্তান প্রতিপালনে সফল হওয়ার উপায়) লেখক: Nesar Atiq রিভিউ লিখেছেন: Badrul Islam Mashud ‘গুড প্যারেন্টিং’ নামের মধ্যেই যেন সব কথা বলে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, সঠিকভাবে সন্তানদের লালন পালন/গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মাতা-পিতা বা অভিভাবকদের দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে। সন্তানকে সঠিকভাবে লালন পালন করে সুনাগরিক বা সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সত্যিই কঠিন, আর এ কঠিন কাজটি মাতা-পিতা করেন। তাঁদের সঠিক পরিচর্যা পেলেই সন্তান যথাযথভাবে গড়ে ওঠে—এ কথাটি গুড প্যারেন্টিং বইয়ে অত্যন্ত সঠিক ও যত্নসহ তুলে ধরা হয়েছে। আগে সন্তানদের শাসন করার ক্ষেত্রে বেত্রাঘাত, খাওয়া বন্ধ, ঘর থেকে বের হতে না দেওয়া, কখনও কখনও পরিবারের অন্য সদস্যরা দোষী সন্তানের সাথে কথা পর্যন্ত বলা বন্ধ রাখত। কিন্তু সময় পাল্টেছে। এখন শাসনের ধরণও পাল্টেছে। নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে সন্তানদের ’মানুষ’ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। কী ধরণের কৌশল অবলম্বন করলে সফলতা আসবে— সে সম্পর্কেই বইটিতে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা লক্ষ্য করা যায়। তাই তো লেখক নিজেই তাঁর কৈফিয়ত পর্বে লিখেছেন— ‘এখন দিন বদলেছে। প্রযুক্তির বিস্ময়কর উৎকর্ষে পুরো বিশ্ব যে কারও হাতের মুঠোয়। তাই আজকের সদ্য জন্ম নেওয়া শিশু শুধু তার পরিবারর সদস্য কিংবা দেশের নাগরিকই নয়, সীমানা ছাপিয়ে বিশ্ব গ্রামের (Global Village) স্মার্ট প্রতিনিধিও বটে। এ প্রেক্ষাপটে মানবশিশুর মন ও মননের বিকাশে স্থানিক ও বৈশ্বিক উপাদানের বিস্তর প্রভাব রয়েছে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘ ...সেদিক থেকে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি খুবই অপ্রতুল। ....সমাজের অংশীজন হিসেবে নানা মাত্রায় জীবন ও সমাজকে যেভাবে দেখছি বা দেখতে চেয়েছি, সেই লক্ষ্যে দুই মলাটের মাঝখানে কিছু কথা লিখেছি।.... সব জটিল সমস্যার সূত্রপাত মূলত পরিবার নামক সংগঠনকে উপেক্ষা করা এবং একে দুর্বল করা থেকে। সুতরাং এর সমাধানও শুরু করতে হবে এই পরিবার থেকেই।’- লেখক নেসার আতিক এর এ বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট ‘গুড প্যারেন্টিং’ এ সমস্যা ও তার সমাধান নিহিত। গুড প্যারেন্টিং বইটি গল্প নয়, প্রবন্ধ নয়, নয় কোনো গবেষণাপত্র। এটি সামাজিক প্রেক্ষিত এবং অভিভাবকের দায়িত্ব ও সন্তানদের প্রতিপালনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ সমাজ গড়ার ভাবনার কথা—এমনটা বলা যায়। বইটি পাঠক-পাঠিকাদের সুবিধার্থে ১১টি পর্ব আকারে লিখা হয়েছে। প্রথমেই রয়েছে— প্যারেন্টিং ভাবনা, এরপর একে একে প্যারেন্টিং : বাস্তবতা, শিশুর বিকাশে দক্ষতা পিরামিড, দক্ষতার নানা দিক : শিক্ষা, ভাষা, বিশ্লেষণ; সামাজিক দক্ষতা : প্যারেন্টিং আচরণ, সন্তানদের বেড়ে উঠায় পারিবারিক বন্ধন, সন্তান প্রতিপালনে পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব, সন্তান পালন সাধনার বিষয় এবং সবশেষে প্যারেন্টিং : নিজের আয়নায় আমি।’ উপরের সূচিকে যদি পিরামিড আকারে ভাবা যায়, তাতেই বোঝা যাবে সন্তানদের কেমনভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। বইটি পড়ে এটা অনুধাবন করা গেছে, জীবনের নানা পরতে নিবিড় যত্ন ও মায়া-মমতায় আগলে রেখে সন্তান বড়ো করতে হয়—লেখক এ কথাটি যথার্থই বলেছেন। গুড প্যারেন্টিং বইটির মূল অংশ ১২৬ পৃষ্ঠার। এই স্বল্প পরিসরে গুড প্যারেন্টিং কেমন হলে সমাজ-পরিবার তথা রাষ্ট্র-বিশ্ব ইতিবাচকভাবে গড়ে উঠবে তা সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এর মাধ্যমে অসাধ্য সাধন হয়েছে শুধু বইটি ও এর লেখকের লেখনীর গুনে। অসাধারণ সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ উপস্থাপনাগুণে এর ইতিবাচক প্রভাব পাঠক তথা যারা বইটি পড়বেন তারা সহজেই সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে উপকৃত হবেন—নি:সন্দেহে বলা চলে। বইটিতে যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, তা আমাদের সমাজেরই অংশ। এসব পরিস্থিতিকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। এটি কেবল একটি গোলাপ বা হাসনাহেনা বাগান নয়, এটি সত্যিই একটি ‘ফুল বাগান’। সব ফুলের সমাহারে যেমন ফুল বাগান হয় বইটিতে সন্তান ও পিতা-মাতার সমন্বয়ে সুন্দর পরিবার-সমাজ গঠনের নানা চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে। মানুষের জন্য পৃথিবীতে বেঁচে থাকার বড় প্রেরণা সন্তান সন্ততি। কর্পোরেট চিন্তার এই যুগেও মানুষ যেখানে সত্যিকার ভালোবাসাটুকু গচ্ছিত রাখতে চায়, সেটি তার সন্তান। আশা ভরসা, প্রত্যাশা-প্রাপ্তি, স্বপ্ন-ভয় ইত্যাদি বহুকিছুর ভিত গড়ে ওঠে সন্তানকে কেন্দ্র করে। সমাজিক বিচারে সচেতন বা সফল অভিভাবক অনেকেই আছেন। কিন্তু সন্তান প্রতিপালন নিয়ে ভাবেন, এর ধরণ প্রকৃতি, প্রতিকূলতা, সমস্যা-সমাধান নিয়ে বহুমাত্রিক চিন্তার লোক সত্যিই কম। পশ্চিমা বিশ্বে প্যারেন্টিং বিষয়ে বহু গবেষণা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলে আসছে বেশ সময় ধরে। এদেশেও ব্যক্তিগত চিন্তার আবেশে কেউ কেউ কাজ করছেন। বইটিতে সন্তান প্রতিপালন সংশ্লিষ্ট নানাদিক সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বাহুল্যতা বর্জিত ঝরঝরে গদ্যের স্বাদ পাঠক বার বার পাবেন। বইটিতে বহু তথ্য উপাত্ত তুলে ধরাা হয়েছে। তবে বইটির বিশেষ বৈশিষ্ট হলো—বইটিতে কুরআন সুন্নাহর সাথে কমবেশি সংশ্লিষ্ট করতে চেয়েছেন। এক্ষেত্রে বেশ দক্ষতা ও সতর্কতার পরিচয় দিয়েছেন লেখক। লেখক বলতে চেয়েছেন, আমি একজন পিতা, সহকর্মী, ছাত্র, বন্ধু, একজন স্বামী; এই সকল মাত্রায় জীবনটাকে যেভাবে দেখেছি, সেখান থেকে আমার মনে হয়েছে যে, প্যারেন্টিং বা সন্তান প্রতিপালনের বিষয়ে আমাদের পেশাদারিত্বের অনেক অভাব আছে। এখানে পেশাদারিত্বের কথাটা ইচ্ছাকৃতভাবে বলা হয়েছে। কারণ, একজন মানুষ যখন চিকিৎসক হতে চায়, প্রকৌশলী হতে চায় বা ভালো আইনজীবী হতে চায়, তখন তিনি সেই বিষয়টা ভালোভাবে লেখাপড়া করে শিখে নেন। কিন্তু আমাদের সমাজে প্যারেন্টিংয়ের বিষয়টাকে একটা প্রাকৃতিক বিষয় মনে করা হয়। দুনিয়া অনেক বদলে গেছে, অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের মা-বাবা ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন না। কিন্তু আজকের মা-বাবারা ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, সুতরাং প্যারেন্টিংয়ের এই বিষয়টাকে যদি পেশাদারিত্বের আকারে দেখা না যায়, তাহলে আমরা কাঙ্খিত পরিবার বা সমাজ পাব না। সাথে সাথে মা-বাবা ও সন্তানদের মাঝে একটা দূরত্ব তৈরি হবে। যেমনটা বর্তমানে হচ্ছে। এই প্রয়োজনের বোধ থেকেই মূলত ‘গুড প্যারেন্টিং’ বইটি লিখা হয়েছে। নেসার আতিক তার বইয়ের ১২০ পৃষ্ঠায় ‘প্যারেন্টিংও শেখার বিষয়’ নামক সংক্ষিপ্ত অংশে বলেছেন—'পেশাদার হতে চাইলে আপনাকে সংশ্লিষ্ট পেশায় পারদর্শী হতে হয়, নিজের দক্ষতা প্রমাণ করতে হয়। প্যারেন্টিং এমন একটা বিষয়, যেখানে আমরা মনে করি আমাদের শেখার প্রয়োজন নেই বা পারদর্শিতার কিছু নেই। সন্তান জন্মদানকে আমরা শুধু প্রাকৃতিক বিষয় মনে করি। মনে রাখতে হবে, আপনি যে পেশায় কাজ করেন, সেখানে আপনার জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, সব উজাড় করে সর্বোচ্চ পরিশ্রম করেন, যেন আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেন। প্যারেন্টিং তার চাইতেও গুরুত্বপূর্র্ণ দায়িত্ব-কর্তব্য।’ সত্যিই লেখক যথার্থ বলেছেন। বইটি ৮৬ পৃষ্ঠায় সন্তানদের বেড়ে ওঠায় পারিবারিক বন্ধন অধ্যায়ে ছোটো ছোটো করে বেশ কয়েকটি তথ্য বা পরামর্শ রয়েছে। এর মধ্যে কেমন হওয়া প্রয়োজন পিতা-মাতা ও সন্তানদের আচরণ— তার কিছু বর্ণনা রয়েছে। যেমন: স্বামী-স্ত্রী একে অপরের আস্থা আর নির্ভররতার আশ্রয়, বিশ্বাস ও মমতায় ঘেরা বন্ধন, সন্তানদেরর জন্য সময় বিনিয়োগ, চাকরিজীবী মা-বাবার বাড়তি কাজ, খাবার টেবিলে আলাপচারিতা, আপনার মা-বাবার যত্ন নিন, পরামর্শ ও মতামতের গুরুত্ব দিন, আত্মনির্ভরশীল হতে শেখান, বড়ো স্বপ্ন দেখা, পরিবারের প্রশংসার সংস্কৃতি, পারিবারিক ইতিহাস-ঐতিহ্য আলোচনা, শ্রদ্ধাপূর্ণ মতামত, বিনীত জীবননীতি, খাবারের আদব, সালাম দিন সবার আগে, ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন, গৃৃহকর্মীর প্রতি মানবিক আচরণ, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। এই ছোটো ছোটো পরামর্শগুলোকে যদি জীবনে ধারণ করা যায়, তাহলে আর কিছু প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। লেখকের শুধু এই অংশটুকু পড়লেই ‘গুড প্যারেন্টিং’ বইটি পড়া হয়ে যাবে, এটা সাহস করে বলা যায়, অন্তত আমার কাছে তা-ই মনে হয়েছে। বইটিতে বিভিন্ন অধ্যায়ে ছোটো ছোটো শিরোনামের সাথে প্রয়োজনীয় কিছু চিত্র দেয়া হয়েছে, যা বইটিকে আরো বেশি পাঠযোগ্য, গ্রহণযোগ্য ও শিক্ষণীয় করে তুলেছে। বইটির ৫৪ পৃষ্ঠায় ‘ভাষাগত দক্ষতা’ অংশে বলা হয়েছে— ‘মাতৃভাষা বাংলা ভাষা খোদার সেরা দান।’ কবির এই অভিব্যক্তি মানুষের প্রাণের গভীর থেকে উৎসারিত। বিদেশি ভাষা আয়ত্ত করার আগে মাতৃভাষার দক্ষতা অর্জন করা দরকার। মাতৃৃভাষায় দক্ষতা থাকলে বিদেশি ভাষা শেখাও সহজ হয়। কী চমৎকারভাবে নিজ মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে বইটিতে! বইটির ৫৯ পৃষ্ঠায় সামাজিক দক্ষতা অধ্যায়েও বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ রয়েছে, যা আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- ‘ভালোবাসা ও সহিষ্ণুতা’ পর্বে বলা হয়েছে— ‘আমাদের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে অসহিষ্ণুতা। যেসব বিষয়ে বিতর্ক নেই, সেগুলোকে গুরুত্ব না দিযে বিতর্কিত বিষয়ে আমাদের আগ্রহ বেশি। নব্বই ভাগ বিষয়েই আমরা সহমত পোষণ করি। তা সত্ত্বেও আমরা মতানৈক্যকেই বেশি গুরুত্ব দিই। একটা বহু ভাবনার সমাজে ‘একমাত্র ব্যাখ্যা’ বলে কিছু নেই। অনেক মত, অনেক পথ থাকতেই পারে। প্রয়োজন সবার মতামতকে শ্রদ্ধা করার মানসিকতা। সব ফুল কিন্তু সৌরভ ছড়ায় না। কাজেই, ভিন্নমতের ভাষা হতে হবে মার্জিত ও রুচিশীল।. ..কথাটি অত্যন্ত যথার্থ। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে স্থিতিশীল রাখতে এই পরামর্শের চেয়ে আর বেশি কী হতে পারে! বইটির ৯৮ পৃষ্ঠায় পরিবারে প্রশংসার সংস্কৃতি অংশে বলা হয়েছে, ‘পরিবারে একটি প্রশংসার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। যেখানে থাকবে প্রত্যেকের কাজের স্বীকৃতি ও উৎসাহ। এ ধরণের স্বীকৃতি পরিবারে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করে যেখানে পারস্পরিক আস্থা ও নির্ভরশীলতা, একজন আরেকজনকে সাহায্য করার প্রবল ইচ্ছা, সুখ-দু:খ ভাগাভাাগি করে নেয়ার মানসিকতা বিরাজমান।’ পারিবারিক প্রশংসার সংস্কৃতির এই চেয়ে বড়ো কোনো পরামর্শ আর কী হতে পারে! ১০২ পৃষ্ঠায় ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন অংশে বলা হয়েছে, ‘আয়-ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনযাপন করুন। ভোগবাদের দাসে পরিণত হলে পরিবারে কলহ-বিবাদ, বিপর্যয়, পাস্পরিক অবিশ্বাস সংঘাত লেগেই থাকে।’ - এ কথা দিয়ে লেখক মানুষকে সুশৃঙ্খল ও সহজ-সরল, সৎ জীবনযাপনের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। এটা আমাদের সকলের জীবনেই একান্তভাবে প্রয়োজন। ‘গুড প্যারেন্টিং’ বইটি যে কেবল পারিবারিক বন্ধনের অকাট্য দলিল তা নয়, বইটি সামাজিক ভাবনাকেও নানাভাবে ফুটিয়ে তোলার সযত্ন চেষ্টা করা হয়েছে। যা আমি মনে করে বইটি থেকে আমাদের বাড়তি পাওনা হবে। লেখক নেসার আতিক তাই বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় বলেছেন— ‘অর্থমূল্য আছে এমন সহায়-সম্পদের সুরক্ষায় আমরা সচেতনভাবে কেউই চেষ্টার ত্রুটি করি না। জগৎ-সংসারে কষ্টের ধন খোয়া গেলে তা আবারও ফিরে পাওয়ার অসংখ্য উদাহরণ আছে। ব্যতিক্রম শুধু মানব সন্তানের বেড়ে ওঠায়। আমরা কখনো কি ভেবেছি, শিশুর যথাযথ ‘মানুষ হয়ে ওঠা’ না হলে শুধু একটি পরিবারই ক্ষতিগ্রস্থ হয় না, একটি সম্ভাবনারও অকাল পরিসমাপ্তি ঘটে। মা-বাবা হিসেবে আমরা কি আমাদের দায় এড়াতে পারি? প্যারেন্টিং অভিযাত্রায় আমরা কি আমাদের কর্তব্য পালনে সত্যনিষ্ঠ? এই অংশটুকুকে হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করলেই বইটির সফলতা। একটি কথা। গুড প্যারেন্টিং বইটি আমি প্রায় দুই মাস যাবত নিজে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েছি। বুঝতে চেষ্টা করেছি। আমার পরিবারের সদস্যদের-সন্তানদের পড়তে বলেছি, তারাও বইটি পড়েছে। সত্যি কথা বলতে কি, আমার আগের ভাবনা ও পরিবারের প্রতি দায়িত্ব আগের তুলনায় যেনো আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, আমার সন্তানদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। সত্য কথা, এটা গুড প্যারেন্টিং বইটি পড়ার পর। আমার পরিবারের আচার-আচরণ আগের তুলনায় আরো সমৃদ্ধ হয়েছে, মাশাআল্লাহ। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, গুড প্যারেন্টিং বইটি যে কোনো পরিবার একবার পড়লে সে পরিবারে আগের তুলনায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবেই- ইনশাআল্লাহ। আশা করি বইটি পাঠ করে উপকৃত হবেন এবং জীবন বদলে যাবে। এমন একটি সুন্দর গ্রন্থ লিখার জন্য লেখক নেসার আতিক প্রশংসা পেতেই পারেন, পেতে পারেন মানুষের ভালোবাসাও।