বাঙালি জাতির দীর্ঘ যে সংগ্রাম গণতান্ত্রিক অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি, ভাষা ও সংস্কৃতির মুক্ত বিকাশের জন্য, সে সবই নানা সামাজিক ঢেউ নানা আকারের, যা পর্যায়ক্রমে নানা রূপ পরিগ্রহ করেছে এদের উপরিপাতনে। এসবই ছিল প্রস্তুতিপর্ব একটি বড় সামাজিক ও জাতীয় জাগরণের। অধিকার প্রাপ্তির, আত্মপ্রকাশের, মানবিক চেতনা লাভের এবং সব ধরনের দারিদ্র্য থেকে মুক্তি অর্জনের নানা আন্দোলন সমন্বিত ও একীভূত হয়ে, মুক্তিযুদ্ধের মতন ব্যাপক একীভূত সমবায়ী রূপ পরিগ্রহ করেছে। সব মিলে এক প্রপঞ্চ ঘটনা, একটি প্রতিভাস- যার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে শেখ মুজিব, যিনি বঙ্গবন্ধু উপাধি পেয়েছেন জনতার মঞ্চে। গণতন্ত্রের জন্য বাঙালি জাতির দীর্ঘ সাধনা, নানা সংগ্রাম ও সমন্বয় সাধনে নেতৃত্ব দানের ভেতর দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতিরূপে বঙ্গবন্ধুর উদ্ভব এবং অবশেষে একটি মহান মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম আসলে একটি বড় একীভূত গল্পের তিনটি অধ্যায়। সমুদ্রের ঢেউ যেমন এর শক্তি সঞ্চয় করে অতিক্রান্ত বিপুল জলরাশির কম্পন থেকে এবং সমানের জলরাশিতে সেই ঢেউয়ের শক্তিকে সঞ্চারিত করতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা তেমনি এক প্রতিভাস। এর সীমানা বিস্তৃত বাঙালি জাতির সংগ্রামের মধ্যে যেমন, তেমনি স্বাধীনতা লাভের প্রপঞ্চ ঘটনায়। এই রসমগ্রতাকে যিনি তাঁর স্বপ্নে ধারণ করেছিলেন, তিনি বঙ্গবন্ধু।