ভূমিকা ২০০৯ সালের জুন মাসের ঘটনা, ট্রেনে বাসায় যাচ্ছিলাম। প্রকাশক রনি ভাইয়ের ফোন আসল, ‘সুব্রত ভাই, জাফর স্যার বললেন পাইয়ের উপর একটা বই বের করতে। কী ভাই, পারবেন?’ সাতপাঁচ না ভেবেই বলে ফেললাম, ‘না পারার কি আছে! আগামি বইমেলাতেই বের হবে, আপনি নিশ্চিন্ত থাকেন।’ এইভঅবেই শুরু হয় পাই পুঁথির কাজ। পাই নিয়ে প্রকাশিত লেখাগুলো সংগ্রহ করে সম্পাদনা করা, ছবি সংগ্রহ করা, আরও কিছু নতুন লেখা প্রস্তুত করা, সুন্দর প্রচ্ছদ, পাইয়ের মান সাজিয়ে লেখা ইত্যাদি সবকিছুর পর গণিতপ্রেমীদের জন্য আমাদের উপহার ‘গণিতের রাজ্যে পাই’।
‘গণিতের রাজ্যে পাই’ বইটিতে শ্রদ্ধেয় জাফর স্যারের লেখাটা স্যার এবং শ্রদ্ধেয় কায়কোবাদ স্যারের ‘নিউরনে অনুরণন’ বই থেকে নেওয়া। মুনির ভাইয়ের দুটি লেখাই পাই দিবস উপলক্ষে প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়েছিল। সারা দেশে পােই দিবসকে ছড়িয়ে দিতে মুনির ভাইয়ের আগ্রহের কোনো অন্ত নেই। স্ব-উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে পাইয়ের মান নির্ণয় সৌমিত্র ও অভীকের পাইয়ের প্রতি সুবিশাল ভঅরোবাসার পরিচয় দেয়। আর বাকি লেখাগুলোর মধ্যে ‘আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল’ লেখাটি পাইয়ের মানের অংকগুলোর বিক্ষিপ্ততা নিয়ে লেখা। অভীকের ‘পাইয়ের সরস গণিত’ অনেকের কাছেই নীরস (!!) লাগতে পারে। লেখাটি পাইয়ের বিভিন্ন গাণিতিক উৎকর্ষ নিয়ে লেখা। পাই-পাগল চমকের লেখাটি একটু ভিন্নমাত্রার যুক্তির পাশাপাশি পাইয়ের প্রতি মানুষের অপরিসীম আবেগ আর ভালোবাসাও তো আর কম নয়! বর্তমানে ইংল্যান্ডে বসবাসরত রক্তিম বড়ুয়াকে তার লেখা দুটির জন্য বিশেষ ধন্যবাদ।
‘গণিতের রাজ্যে পাই’ বইয়ের একটি প্রধান অংশ হল ছক আকারে পাইয়ের মান। বইয়ের শেষাংশে পাইয়ের মান দশমিকের পর ১,৩০,০০০ ঘর পর্যন্ত ৫০০ অংকের ছকে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছক আকারে পাইয়ের মান দেওয়ার আইডিয়াটি জাফর স্যার দিয়েছেন। ফলে যে কেউ পাইয়ের যেকোনো ঘরের অংকটি চোখের পলকেই বের করতে পারবেন। এছাড়া দেখতে পারেন, কোথায় লুকিয়ে আছে আমাদের প্রিয় সংখ্যা ১৯৭১, কোথায় রয়েছে ১২৩৪৫৬ইত্যাদি বিভিন্ন রকম অংক ও সংখ্যার মজার খেলা।
এখন ধন্যবাদের পালা। প্রথমেই বিশেষ ধন্যবাদ প্রকাশক রনি ভাই, মুদ্রণশিল্পী মশিউর ভাই (সৃজনী) এবং আলমগীর ভাই (প্রথম আলো), কার্টুনিস্ট রনি এবং অনুজ সুদীপ্তকে। বিডিওএসএন (বাংলাদেশ ওপেন সোর্সে নেটওয়ার্ক)-এর আইয়ুর ভাইকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষার আমাদের জানা নেই। মুভার্সদের (ম্যাথ অলিম্পিয়াড ভলান্টিয়ার্স) এবং গণিত অলিম্পিয়াড সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি রইল অশেষ ভালোবাস।
এখন প্রশ্ন হল এত ঘটা করে শুধুমাত্র পাইয়ের উপর কেন বই লেখা হল? উত্তর হল সবার কাছে সুপরিসরে পাইয়ের সৌন্দর্য পৌঁছে দেওয়া। শুধু তাই নয়, আমরা সবসময় বলি ‘সবার জীবন পাইয়ের মতো সুন্দর হোক’। কেন আমরা এই কথাটি বলে থাকি তা এই বইয়ের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ‘গণিতের রাজ্যে পাই’ বইয়ে পাইয়ের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য, বিশালতা, যুক্তি আর গণিতের নান্দনিকতা খুঁজে পাবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সবার জীবন পাইয়ের মতো সুন্দর হোক।
সুব্রত দেব নাথ একাডেমিক কোর্ডিনেটর বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি
সূচি * পাই-পুঁথি- সৌমিত্র চক্রবর্তী * পাই প্রতীকটি গণিতে আসল কেমন করে? - সুব্রত দেব নাথ * পাই কেমন করে পাই - মুহম্মদ জাফর ইকবাল * পাইয়ের সৌন্দর্যে মাতুন, পাইয়ের আনন্দে ভাসুন - মুনির হাসান * সম্ভাবনার মাঝে পাই-এর বাদ্য বাজে- সৌমিত্র চক্রবর্তী * সম্ভাব্যতা, পাই এবং দ্বিতীয় পর্ব- অভীক রায় * পাই-এর মতো সুন্দর হোক - মুনির হাসান * eip + 1 = 0- সুব্রত দেব নাথ * পাইয়ের সরল গণিত- অভীক রায় * পাই নিয়ে আরও কথা- রক্তিম বড়ুয়া * একজন চিকিৎসক রাজনীতিবিদ এবং পাই=4- রক্তিম বড়ুয়া * পাই : ভালোবাসার কথা বলে যাই- নওরীন হাসান চমক * আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল - সৌমিত্র চক্রবর্তী * পাই এর মান