রাতের গভীরতার মতোই যন্ত্রণার গভীরতা বাড়তে থাকে। বুক থেকে সব কুয়াশা সরে গেছে শরীর যন্ত্রণার তোড়ে। কী ভীষণ কষ্ট! থেকে থেকে কোমরের পেছন থেকে ঘা দিচ্ছে এমন এক শক্তি... যেন বল্লমের ধার। আমাকে খুঁড়ছে। ঘনঘন দেখে যাচ্ছে ডাক্তার। এক সময় আমার বিষাক্ত দেহ ট্রলিতে উঠানো হলো। কোথায় যাচ্ছি আমি! আমার গতিময় শরীর খিঁচুনি দিয়ে উঠছে। দাঁতের সাথে দাঁত লেগে যাচ্ছে। তিনতলা... জিতুর স্পর্শ কী কুৎসিত... কাঁচা টয়লেটের গন্ধ। থরথর কম্পিত দেহকে অন্য কোথাও রাখা হলো। চিল... তুমি কি তোমার ঠোঁটের ভেতর আমাকে স্থান দিচ্ছ? ধর্মমতে ব্যভিচারিণীর শাস্তি কী... মাটিতে পুঁতে তার মাথায় পাথর ছুড়ে মারা? আমার ভাবনার শব্দ কি শুনে ফেলেছে সবাই? পাথর ছুড়ছে আমার মস্তকে?
নাসরীন জাহান
নাসরীন জাহান ১৯৬৪ সালের ৫ মার্চ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাটে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী লেখক, ঔপন্যাসিক, এবং সাহিত্য সম্পাদক। আশির দশকের শুরু থেকে লেখালেখি শুরু করে "উড়ুক্কু" উপন্যাসের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেন এবং এই উপন্যাসের জন্য ফিলিপ্স সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কারও পান। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে "স্থবির যৌবন", "বিচূর্ণ ছায়া", "পথ", "হে পথ", "সারারাত বিড়ালের শব্দ" এবং "চন্দ্রের প্রথম কলা" অন্তর্ভুক্ত। "উড়ুক্কু" উপন্যাসটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন কায়সার হক। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাসের মধ্যে "লি", "ক্রুশকাঠের কন্যা", "শঙ্খনর্তকী", এবং "ঈশ্বরের বামহাত" উল্লেখযোগ্য।