আমাদের মধ্যে অনেক ধরনের হতাশা কাজ করে। পাত্তা না পাওয়ার হতাশা। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে না পারার হতাশা। সহপাঠীদের থেকে পিছিয়ে পড়ার হতাশ। মেধাবী না হতে না পারার হতাশা। বিত্তশালী হতে না পারার হতাশা। হেরে যাওয়ার হতাশা। পছন্দের ব্যক্তি বা বস্তুকে না পাওয়ার হতাশা। ইচ্ছে পূরণ করতে না পারার হতাশা। এমন শত হতাশার ঘুরপাকে বন্দি জীবনের পৃথিবীর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা মানুষগুলো নতুন করে মনে আশা সঞ্চার করতে পারছেন না, হতাশার মাঝেও বারবার ঘুরে দাঁড়াতে মনে শক্তি ও সাহস জোগাবে ‘ঘুরে দাঁড়াও আরেকবার’ বইটি।
গাজী মিজানুর রহমান (বিসিএস)
ছোটবেলায় প্রচুর খেলাধুলা করতাম। পড়ার চেয়ে খেলাধুলায় সময় বেশি ব্যয় করতাম। তার জন্য বাসায় প্রচুর বকাবকি এবং মাঝেমধ্যে উত্তম-মধ্যমও খেতে হতো বড় ভাইয়া ও ফুফুর হাতে। মা তেমন উত্তম-মধ্যম না দিলেও মাঝেমধ্যে বকাবকি করতেন; খেলার ব্যাট-বল আগুনে পুড়িয়ে দিতেন। ছোটবেলায় আমি খুব গম্ভীর প্রকৃতির ছিলাম। পরিচিত ছাড়া কারও সাথে তেমন মেশা হতো না। দেখা গেছে, হাই স্কুলে কোনো এক বেঞ্চের কোণায় চুপচাপ বসে থাকতাম। পড়া পারলেও ক্লাসে খুব একটা পড়া বলতে চাইতাম না।
আমার পড়াশোনায় সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল, আমি প্রাইমারি স্কুল লাইফে ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়তাম। ফলে আমি অন্যদের চেয়ে পড়াশোনায় অনেক পিছিয়ে যেতাম। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে অনেক মন খারাপ হতো। পরে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যেত। এরপর প্রতিবন্ধকতা যদি বলি, মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে সব সময় কিছুটা হলেও অর্থিক টানাপোড়েন তো ছিলই।
বর্তমান সময়ে বিসিএস ও ক্যারিয়ার বিষয়ক বহুল আলোচিত ও তুমুল জনপ্রিয় লেখক গাজী মিজানুর রহমানের জন্ম ১৯৯০ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায়। বাবা গাজী সিরাজুল ইসলাম অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী। মা গাজী ফাতেমা বেগম গৃহিণী। তিনি একাধারে একজন লেখক, মোটিভেশনাল স্পিকার ও সরকারি কর্মকর্তা। গাজী মিজানুর রহমান বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা শুরু গ্রামের স্কুলে। ২০০৬ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার এল এন হাই স্কুল থেকে এসএসসি, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০০৮ সালে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করার পর তিনি পূবালী ব্যাংক লিমিটেডে সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তারও আগে তিনি স্নাতক পরীক্ষা শেষে অ্যাপিয়ার্ড সার্টিফিকেটের মাধ্যমে ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৷ জীবনের প্রথম বিসিএসেই প্রিলি, রিটেন ও ভাইভা পাস করলেও তিনি কোনো ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হননি। তিনি ৩৪তম বিসিএসে পিএসসি কর্তৃক দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হলেও তিনি তাতে যোগদান করেনি ৷ পরবর্তীতে তিনি ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষা মাধ্যমে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন ৷ ফলে তিনি পূবালী ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিসিএস ক্যাডার হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি আবারো ৩৬তম, ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও কোনো ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হননি ৷ তিনি ৩৮তম বিসিএস প্রিলিতে উত্তীর্ণ হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ট্রেনিংয়ে থাকার কারণে রিটেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন নি৷ সর্বশেষ তিনি ৪০তম বিসিএস প্রিলিতে উত্তীর্ণ হলেও রিটেন পরীক্ষায় আর অংশগ্রহণ করেননি। তাঁর এই সুদীর্ঘ ৩৪-তম-৪০তম বিসিএস (৩৯তম স্পেশাল বিসিএস ব্যতীত) পর্যন্ত টানা ৬টি প্রিলি পাশের বাস্তব অভিজ্ঞতা, নোট, সাজেশন ও টেকনিক দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম সাজেশনভিত্তিক বিসিএস প্রিলির পূর্ণাঙ্গ বই 'BCS Priliminary Analysis' বইটি রচিত ৷ তিনি পেশাগত জীবনের পাশাপাশি বিসিএস ও জব প্রত্যাশীদের জন্য 'BCS টেকনিক' নামে একটি বিসিএস স্পেশাল প্রাইভেট প্রোগ্রাম প্রতিষ্ঠা করেন ৷ এছাড়াও তিনি 'দৈনিক কালের কণ্ঠ', 'দৈনিক আমাদের সময়' সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এবং ফেসবুক, ইউটিউব এবং ইন্টারনেটে বিসিএস ও ব্যাংকিং ক্যারিয়ার নিয়ে তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে নিয়মিত পরামর্শ ও লেখালিখি করেন এবং বিভিন্ন ধরনের মোটিভেশন ও উৎসাহ দিয়ে থাকেন।