ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ‘গাছপালা তরুলতা’ প্রকৃতি, গল্প, কবিতা, জাতক ও মিথের মিশেলে স্বতন্ত্র বাকভঙ্গির রচনা। পুরাকালের হিমবন্ত প্রদেশের রাজা থেকে একালের বৃক্ষপ্রেমিক সাধারণ মানুষ এখানে ভীড় করেছে। ঢাকা শহরে কিছু দুর্লভ গাছ ও ফুল আছে। পারুল ফুল কখন কোথায় ফোটে বা তার কী কী গুণ? পিয়ালের প্রাচীন নাম রাজায়তন। কুর্চি জন্মায় বাংলার আনাচে, এখন প্রায় অচেনা। নাগালিঙ্গম, মুচকুন্দ, পুরুষ লজ্জাবৎ, শিলীন্ধ্র, বাঁশের কোঁড়, পাখিফুল এসব চিরকাল অচেনা থাকবে? কালিদাস, মাইকেল, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাশের কবিতায় গাছপালা ও ফুলের প্রসঙ্গ প্রবলভাবে এসেছে। তারপর কেন এভাবে পাই না? রসজ্ঞ পাঠক এই বইয়ে অতীতকে প্রবলভাবে খুঁজে পাবেন। আবার বর্তমানকেও। গল্পরস ও রহস্য আছে ওষধিগুণ পাবেন। আর আমার ভালোবাসা। ভালোবাসা তো রীতিনীতি মানে না, সেই দোষ এই গ্রন্থে বিদ্যমান। আমার গল্প ও উপন্যাসে যদি প্রকৃতির প্রবল আধিপত্য থাকে, গাছপালার এই বইতেও আছে কথা ও কাহিনীর একচ্ছত্র রাজত্ব।
বিপ্রদাশ বড়ুয়া
বিপ্রদাশ বড়ুয়া, জন্ম ২ আশ্বিন ১৮৬২ শকাব্দ (২০ সেপ্টেম্বর ১৯৪০) চট্টগ্রামের ইছামতী গ্রামে। পড়াশুনা চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। গল্প, উপন্যাস, প্রকৃতি ও বিচিত্র বিষয়ে লেখেন। পাখি, সমুদ্র ও বৃক্ষ, বনমর্মরভূমি, ভ্রমণ, গবেষণা-বিশাল লেখার ভুবন। বাংলাদেশের আনাচ-কানাচ উঠে আসে দৈনিক পত্রিকার কলামে। রাতের রেলগাড়িতে ছায়াপথে ভ্রমণ এই বিষয়ে প্রথম পদক্ষেপ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিশাল রাজ্যে প্রবেশের ছোট্ট জানালা। সেই থেকে শুরু। তার ফসল দৈনিক পত্রিকার সহজ-সরল লেখাগুলো। প্রকৃতির বিচিত্র বিষয় নিয়ে এক ডজনের বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। গাছপালা, তরুলতা ও বৃক্ষ ও নিসর্গ, নিসর্গের খোঁজে, প্রকৃতিও প্রতিশোধপরায়ণ, বিপন্ন বাংলাদেশ ও বন্ধু বৃক্ষ প্রভৃতি গ্রন্থে তাঁর মনোভঙ্গি ধরা পড়ে। এসব লেখায় ছড়িয়ে আছে আকাশ ও নক্ষত্রপ্রীতি। ১৯৯১-তে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৪১১ সনে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার লাভ। তাঁর তিনটি বই অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার লাভ করে। পেয়েছেন রেডি টুডে প্রবর্তিত প্রথম গ্রিন এওয়ার্ড ২০১০।