আমরা প্রায়শই বলে থাকি, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যত”। আসলে আমরা খুব সহজে এই কথাটি বলে থাকি। তবে এর বাস্তবতা অনেকটাই কঠিন। আমরা আমাদের শিশুদেরকে ভবিষ্যতের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য কতটুকু চেষ্টা করেছি? কয়টা পরিবার-ই বা আছে, যে তারা শিশুদেরকে আগামীর উপযোগী করে গড়ে তুলতে সঠিক পন্থায় পরিচর্যা করছে?
খোঁজ করলে দেখা যাবে এর সংখ্যা খুবই কম। একেবারেই নগণ্য। আমরা আমাদের ক্ষেত-খামার বা গাছ-পালা যতটা গুরুত্বের সাথে পরিচর্যা করি; আমাদের সন্তানদেরকে এর এক সিকিভাগও পরিচর্যা করি না। যার ফলে সন্তান ছোট থেকেই অবহেলা আর অনাদরে বেড়ে ওঠে। অভদ্রতার জীবন যাপন করে। অথচ কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,হযরত যাকারিয়া আ. আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন, "হে আল্লাহ! আমাদের স্ত্রী ও সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান করুন"। (সূরা ফুরকান: ৭৪)
আরেক আয়াতে এসেছে," হে প্রভু! আমাকে আপনার পক্ষ থেকে উত্তম সন্তান দান করুন"। (সূরা আলে ইমরান: ৩৮)
আর রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, "কোনো মানুষ গত হওয়ার পর তিনটি আমল ছাড়া সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। আর সেগুলো হলো-সদকায়ে জারিয়াহ, উপকারী ইলম ও সুসন্তান (যে তাদের জন্য দোয়া করে)। (মুসলিম)
তাছাড়া কথায় আছে, জন্মদাতা হওয়া খুবই সহজ। আদর্শ পিতা-মাতা হওয়া অত্যন্ত কঠিন। আদর্শ পিতা-মাতা সুসন্তান গড়ে তোলার পিছনে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। কারণ আদর্শ পিতা-মাতার সঙ্গ সন্তানের হৃদয়-ক্ষেতে পানি সিঞ্চনের কাজ করে। আদর্শ সন্তান গড়ে তুলতে হলে ইসলামিক দিকনির্দেশনা অনুসরণ করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। তার অভ্যাসগুলোকে নববী আদর্শে রূপায়ন করতে হবে। ছোট থেকেই তাকে সুশিক্ষায় মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পরিশুদ্ধ চিন্তার বীজ তার মধ্যে বপন করতে হবে। কারণ সুস্থ চিন্তা মানসিক চেতনার বিকাশ ঘটায়।জীবন গড়ার উদ্দম-উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণা জোগায়।আমরা যদি আমাদের সন্তানদেরকে ভ্রূণ খেকেই সঠিক পন্থায় পরিচর্যা করি, এই সন্তানই একদিন সুবাসিত ফুল হয়ে জগদ্বাসীকে মোহিত করবে।