বাল্যকাল মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। প্রতিটি মানুষের জীবনেই তার হারিয়ে যাওয়া শৈশব-কৈশোর অমোঘ, অমোচনীয় পদচ্ছাপ ফেলে যায়, রেখে যায় একরাশ মধুর, স্মৃতিমেদুর অনুভুতি। ফুলের গন্ধে ঘুম আসে নায় হুমায়ুন আজাদ রোমন্থন করেছেন তাঁর ছেলেবেলা। অপূর্ব উপমাখচিত ও অভাবিত চিত্রকল্পশোভিত ভাষায় তিনি লিখে গেছেন তাঁর বাল্যকালের কথা। তাঁর গ্রাম রাড়িখালের বর্ণনা স্মৃতিকাতর করে একালের পাঠকেও। আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি, গাছ, পাখি, ফুল, মাঠ, ধানখেত, ঘাস, লতাগুল্ম, পুকুর-বিল-নদী, মাছ, নৌকা, স্টিমার, শিশিরের শব্দ, খেজুর রস, জ্যোৎস্না, গ্রামীণ মেলা, যাত্রা, সার্কাস চিত্রকল্পের মতো হাজির হয় চোখের সামনে। ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না পড়ে পাঠক ফিরে যান নিজ নিজ রাড়িখালে। নিপুণ চিত্রকরের তুলিতে যেন আঁকা হয়েছে একেকটি অধ্যায়।
হুমায়ুন আজাদ
হুমায়ুন আজাদ (২৮ এপ্রিল ১৯৪৭ - ১১ আগস্ট ২০০৪; ১৪ বৈশাখ ১৩৫৪ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন একজন বাংলাদেশী কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। তিনি বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান- ও সংস্কারবিরোধিতা, নিরাবরণ যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে নির্মম সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য ১৯৮০-র দশক থেকে ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের উপর কাজ করার জন্য জার্মান সরকারের নিকট একটি বৃত্তির আবেদন করেছিলেন। ২০০৪-এর ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান।
২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ আগস্ট রাতে একটি পার্টি থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।