ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ খাবার যতই মজাদার হোক না কেন পরিবেশনটা রুচিসম্মত না হলে পরিপূর্ণ তৃপ্তি পাওয়া যায় না। আর খাবার সাজিয়ে পরিবেশনের সর্বাধুনিক পদ্ধতি হচ্ছে কার্ভিং। কার্ভিং হল ফল ও সবজি দিয়ে ফুল, পশু-পাখি, প্রজাপতি কিংবা কোনো নকশা বিশেষ নৈপুণ্যের সঙ্গে তৈরি করা এবং মূল খাবার সাজাবার জন্য ব্যবহার করা। আমরা যেমন কনে সাজাই, ঘর সাজাই, ড্রইংরুম সাজাই তেমনি। সারা বিশ্বে এটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত হলেও আমাদের দেশে এখন ধীরে ধীরে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। কেমননা আমাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে- রুচিতে লেগেছে নানা রঙের হাওয়া।
আজ থেকে প্রায় ২০০০ বছর আগে চীন দেশে সর্বপ্রথম ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল কাভিং শুরু হয়। তারপর থেকে আস্তে আস্তে সারা বিশ্বে এটা ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
থাইল্যান্ড ১৩৬৪ সালে এই চমৎকার শিল্পটি চীন থেকে রপ্ত করে। থাইল্যান্ডে প্রতি বছর কার্ভিং মেলা এবং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
‘ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল কার্ভিং’ বইটি কার্ভিং সম্বন্ধে সবাইকে পরিচিত করে তুলবে। একটি সাধারণ ফল বা সবজি কার্ভিংয়ের ছোঁয়ায় কীভাবে অসাধারণ হয়ে ওঠে, খঅবার সাজিয়ে আধুনিকস ধারায় কীভাবে পরিবেশন করতে হয়- তা দেখানো হয়েছে এই বইটিতে। বইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করে একজন পাঠক হয়ে উঠতে পারেন দক্ষ ‘কার্ভিং’ শিল্পী।
বর্তমানে আমাদের দেশে কিছু কিছু পত্রিকা এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কার্ভিং নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করা হচ্ছে। আশা করছি অচিরেই এই সুন্দর শিল্পটি আমাদের দেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করবে।
ভূমিকা রান্নার সঙ্গে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত। আমাদের জীবনযাত্রার সঙ্গে জুড়ে আছে রান্নাবান্না ও খাওয়াদাওয়া। অন্যদিকে বিভিন্ন বিদেশী খাবারের প্রতি আমাদের আকর্ষণ বাড়ছে।
বর্তমান বিশ্বে রান্নাবান্না নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। গড়ে উঠেছে ইনস্টিটিউট। খাবার যতই মজার হোক না কেন যদি পরিবেশন সুন্দর না হয় তা হলে খাবারে রুচি আসে না। পরিবেশন মানে সাজানো আর সাজানো মানে কার্ভিং। খাবারের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য খাবারের সাথে মিল রেখে কার্ভিং ডিপার্টমেন্ট- যার কাজ শুধু কার্ভিং করা ও খাবার সাজানো। থাইল্যান্ডে প্রত্যেক বছর কার্ভিং মেলা হয়, চলে প্রতিযোগিতা। কিন্তু আমাদের দেশে নেই।
বিংশ শতাব্দী থেকে একবিংশ শতাব্দীতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ নানা দিকে এগিয়ে চলছে। রাজধানীতে দেশী-বিদেশী রেস্তোবাঁয় প্রায় সব ধরনের লোক বাইরের খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। সে কারণে বাসাবাড়িতে উন্নতমানের আধুনিক খাবার তৈরির প্রয়োজনে নতুন নতুন ধরনের বই প্রকাশিত হচ্ছে। মহিলারা রান্নাবান্না শিখছেন নানা কোর্সে। ‘ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল ক্যার্ভিং’ বইটি খাবার সাজিয়ে রুচিসম্মত আধুনিক ধারায় ব্যবহারকারীর সুবিধার কথা চিন্তা করে আকার, প্রচ্ছদ, নকশা, চিত্র এবং যুগের সমসাময়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে এনে বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশিত হল। ‘ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল কাভিং’ বইটি স্কুল, কলেজ ও বাসাবাড়িতে রান্না শেখাবার যোগ্য করে সহজ পদ্ধতিতে লেখা।
এ ধরনের একটি বই লেখার জন্য আমি অনেকের কাছ থেকে উৎসাহ ও সহযোগিতা পেয়েছি। তাঁদের মধ্যে সুরিন, তানভির, তুহিন ভাই, খালেদ ভাই, পাবেল ভাই, লবী আপা, সিতারা ফিরদৌস, সিদ্দিকা কবির, খন্দকার এ কবির স্যার এবং বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী জি এম কাদের স্যারের কথা বিশেষভঅবে উল্লেখযোগ্য। আর একজনের কথা না বইলেই নয়, তিনি হলেন অবসর প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার জনাব আলমগীর রহমান। তাঁর তাগাদা ও সহযোগিতা ছাড়া হয়তো বইটি আলো মুখ দেখত না। তাই তাঁর প্রতি রইল আমার সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা। আমার বইটি যদি কারো সামান্য ভালো লাগে তা হলে আমার শ্রম সার্থক হয়েছে বলে মনে করব এবং ভবিষ্যতে আরো বই লিখতে উৎসাহ বোধ করব।