ফ্রানৎস কাফকা বিংশ শতাব্দীর বিশ্বসাহিত্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী লেখক। এ পর্যন্ত নােবেল বিজয়ী ১০৯ জন লেখকের মধ্যে ৩২ জনই তাঁদের লেখায় কাফকার সরাসরি প্রভাব আছে বলে স্বীকার করেছেন। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের পরে আর কোনাে লেখককে নিয়ে এতটা লেখালেখি বা গবেষণা হয়নি, যা হয়েছে কাফকাকে নিয়ে। গত শতকের মধ্য-নব্বইয়ের আগেই, মৃত্যুর সত্তর বছরের মধ্যে, তাঁকে নিয়ে লেখা হয়ে গেছে ১০ হাজার বই; আর ১৯৯৬ থেকে ২০১০-এর ভেতরে প্রতি ১০ দিনে তার ওপর বের হয়েছে একটি করে নতুন গবেষণা-গ্রন্থ। অনুবাদকের দীর্ঘ বাইশ বছরের ব্যক্তিগত কাফকা-গবেষণার পরে দুই খণ্ডে ফ্রানৎস কাফকা গল্পসমগ্র বাংলায় বেরােনাের পাশাপাশি আলাদাভাবে বের হলাে কাফকার জীবদ্দশায় প্রকাশিত বইগুলাে – একই রকম ভূমিকা, টীকা ও দীর্ঘ পাঠ-পর্যালােচনাসহ। কাফকা-সাহিত্যের ‘নিয়তি বা সম্ভবত এই লেখাগুলাের মহত্ত্ব এটাই যে এগুলাে তুলে ধরে সবকিছুই, কিন্তু নিশ্চিত করে না কিছুই।
ফ্রানজ কাফকা
ফ্রানজ কাফকা (৩ জুলাই, ১৮৮৩ – ৩ জুন, ১৯২৪) ছিলেন একজন উপন্যাস ও ছোটগল্পের লেখক, যিনি প্রভাবশালী লেখক হিসাবে সমালোচক কর্তৃক বিবেচিত। তৎকালীন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের প্রাহা (প্রাগ) শহরে (বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী) একটি মধ্যবিত্ত জার্মান-ইহুদী জার্মানভাষী মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কাফকাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কাফকা অস্তিত্ববাদ তত্ত্বকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিলেন। তাঁর অধিকাংশ কাজগুলো যেমন- "ডি ভারভাণ্ডলাঙ্গ"(রুপান্তর),"ডের প্রোজেন্স"(পথানুসরণ), "ডাস স্কোলস"(দুর্গ) ইত্যাদির বিষয়বস্তু এবং আদর্শিক দিক মূলত বিচ্ছিনতাবোধ,শারীরিক এবং মানসিক নিষ্ঠুরতা,অভিবাবক-সন্তান সম্পর্কের সংঘর্ষ,আতঙ্কজনক উদ্দেশ্য চরিতার্থে ব্যস্ত এমন চরিত্র, মানবজীবনে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপএবং রহস্যময় রূপান্তর - এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।