ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ফোকলোর সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা প্রচলিত আছে- ফোকলোর কেবল নিরক্ষর লোকের সংস্কৃতি এবং এর সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও শিক্ষিতদের শিল্পভুবনের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। সম্ভবত এসব বদ্ধমূল ধারণার কারণে এদেশে ফোকলোরের সাথে লেখ্য-ঐতিহ্য, এমনকি লিখিত সাহিত্যের সম্পর্ক বিচার বিষয়ে বিশ্লেষণ বা আলোচনা-সমালোচনা চোখে পড়ে না। অথচ একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, জগৎ জুড়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রসারে ফোকলোরের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষিতদের সৃষ্ট বহু উপাদান তথা কবিতা, গান, নাটক, উপন্যাস ইত্যাদি ফোকলোরে আত্তীকৃত হয়ে থাকে। ফোকলোর ও লিখিত সাহিত্য : জারিগানের আসরে ‘বিষাদ-সিন্ধু’ আত্তীকরণ ও পরিবেশ-পদ্ধতি শীর্ষক গ্রন্থটি জনসমাজে চর্চিত সেই ধারাকে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে বৃহত্তর পাঠকের সামনে উপস্থাপন করছে।
গ্রন্থটি প্রথম অধ্যায়ে ফোকলোর সম্পর্কে বৈশ্বিক ধারণার সঙ্গে বাংলাদেশের ফোকলোর চর্চার ঐতিহ্যকে উপস্থাপিত হয়েছে, যা যথার্থভাবেই প্রমাণ করছে-বাংলাদেশের ফোকলোর যথেষ্ট অভিনবত্বের অধিকারী।
পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে মূলত বাংলাভাষার শ্রেষ্ঠতম উপন্যাস ‘বিষাদ-সিন্ধু’ কীভাবে বাংলাদেশের ফোকলোরে আত্তীকৃত হয়েছে- তার ইতিহাস, ঐতিহ্য, পদ্ধতি এবং পরিবেশনারীতি সম্পর্কে ক্ষেত্রসমীক্ষার ভিত্তিতে বিশ্লেষণ ও তুলনামূলক পাঠ উপস্থাপন করা হয়েছে।
বহুমাত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে ফোকলোর ও লিখিত সাহিত্য : জারিগানের আসরে ‘বিষাদ-সিন্ধু’ আত্তীকরণ ও পরিবেশন-পদ্ধতি শীর্ষক গ্রন্থটি আকর্ষনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের ফোকলোর চর্চার ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়া খুলে দিল। শুধু তাই নয়, ‘বিষাদ-সিন্ধু’র মতো একটি ধ্রুপদী গ্রন্থের সাথে ফোকলোরের সাংগীতিক উপকরণের পারস্পারিক প্রভাব-প্রেরণার বিষয়ে াালোচনার অভিনবত্বে গ্রন্থটি হয়ে উঠেছে একটি মাইল ফলক ও নতুন তত্বের স্মারক।
সূচিপত্র * ফোকলোর ও লিখিত সাহিত্য * জারিগান ও ‘বিষাদ-সিন্ধু’র বিষয়বস্তু বিচার * কারবালার ইতিহাস ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য * বাংলাদেশের আসরে মীর মশাররফ হোসেন-এর ‘বিষাদ-সিন্ধু’ * আত্তীকরণের ইতিহাস ও পরিবেশন-পদ্ধতি * ‘বিষাদ-সিন্ধু’ কেন্দ্রিয় জারিগান পরিবেশনার * দোহার-দিশা এবং ডাকের প্রকরণ-উপকরণ * ‘বিষাদ-সিন্ধু’ ও জারিগানের তুলনামূলক পাঠ * কারবালা বিষয়ক পুঁথি ও ‘বিষাদ-জারি’র তুলনামূলক পাঠ * উপসংহার * ‘বিষাদ-জারি’র প্রতিযোগিতামূলক আসরের নিয়মাবলি * ‘বিষাদ-জারি’র বয়াতি-শিল্পীদের তালিকা ও নতুন তথ্য * ‘বিষাদ-জারি’র নির্বাচিত বয়াতি-শিল্পীদের পরিচিতি * ‘বিষাদ-জারি’র দুটি ধুয়ার স্টাফ নোটেশন * নির্ঘন্ট
সাইমন জাকারিয়া
সাইমন জাকারিয়া, নাটক রচনায় ভিন্নতর দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করেছেন। একই সঙ্গে জাতীয়তাবোধ ও আন্তর্জাতিক চেতনা ধারণ করেছে তার নাটক, একারণে তার নাটক বাংলাদেশের গ-ি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিম-লে সমাদৃত। বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগে সাইমন জাকারিয়া-র চারটি নাটক প্রযোজিত হয়েছে। এয়াড়া, আমেরিকা-র দি ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো-র সাউথ এশিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজেস অ্যান্ড সিভিলাইজেশন ডিপার্টমেন্টে পড়ানো হয়েছে তার নাটক। সাইমনের রচিত ও মঞ্চস্থ উল্লেখযোগ্য নাট্যপ্রযোজনা মঞ্চনাটক শুরু করি ভূমির নামে, ন নৈরামণি এ নিউ টেস্টামেন্ট অব রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট, বিনোদিনী, সীতার অগ্নিপরীক্ষা ইত্যাদি, আবৃত্তিনাটক ন নৈরামণি ও হলুদ পাতার গান; নৃত্যনাট্যÑ ঋতুঅভিযান। নাটক রচনা ও গবেষণার জন্য অর্জন করেছেন সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার-২০১২ (যৌথভাবে), প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার ১৪১৫, কালি ও কলম-এইচএসবিসি তরুণ লেখক পুরস্কার ২০০৮ ও বাংলাদেশ টেলিভিশন দর্শক ফোরাম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার পদক ২০০৪। জন্ম : ৩ ডিসেম্বর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার জুঙ্গলি গ্রামে।
নাজমীন মর্তুজা
জন্ম : ৩ ডিসেম্বর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার জুঙ্গলি গ্রামে। নাজমীন মর্তুজা কবিতা, উপন্যাস ও গবেষণা-তিনটি ধারার সিদ্ধহস্ত লেখক। প্রকাশিত উপন্যাস নোজলের চোরাবালি এবং কাব্যগ্রন্থ গরুপরম্পরা। তিনি ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে ১৫ই মার্চ দিনাজপুর জেলার সেতাবগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।
Title :
ফোকলোর ও লিখিত জারিগানের আসরে বিষাদ-সিন্ধু আত্তীকরণ ও পরিবেশন পদ্ধতি (সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত) (হার্ডকভার)