কিছু কথা গীতাঞ্জলির একশ বছর পুরলো ২০১০-এ। এক বছর পর ২০১১-য় পার হলো রবীন্দ্র-জন্মের দেড়শো বছর। মনে করার, মনে করিয়ে দেবার মতো ঘটনা দুটোই। আমাদের মাথায় তারা কাড়া-নাকাড়া বাজায়। আমরা রবীন্দ্রনাথের দিকে ফিরে তাকাই। তাকাই নিজেদের দিকেও। এমনে যে ভুলে থাকি, তা নয়। কিন্তু এ আরো একটু নিবিড়ভাবে দেখা। দূরত্বটা মাপি। কতটা জীবনে মিশে আছে তা-ও। এই তাগিদেই গত দুবছরে লেখাগুলো আকার পায়। ছক কেটে পর-পর নয়। যখন যেমন মনে হয়েছে, তেমন। মনে করিয়েও দিয়েছেন কেউ কেউ। ফলে একসঙ্গে করায় এলোমেলো ভাব একটা এসে যায়। অবশ্য ভাবনার বিষয় রবীন্দ্রনাথ সবগুলোতেই। এতে আপত্তি করার মতো একটা ব্যাপার ঘটে যায় বোধ হয়। একই কথার পুনরুক্তি চোখে পড়ে নানা জায়গায়। আমার বিনীত কৈফিয়ত, লেখাগুলো আলাদা-আলাদা। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রসঙ্গে। পুনরুক্তি ছেঁটে বাদ দিতে গেলে নিজের নিজের অবস্থানে যুক্তি-ভাবনার গাঁথুনি দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা। বলবার বিষয়ও যেমন চাই, ঠিক ফোটে না। পড়ার সময় একটার ভেতর অন্যটি না টেনে আনলে এই দোষটাজ্জযদি দোষ মনে হয়জ্জহয়তো কাটানো যায়। ভরসা এটুকু, এমন পুনরুক্তি খুব বেশি নেই। আর, বিষয়ের প্রেক্ষাপট যে-কোনো দুটোর এক নয়। পাঠকের বিরক্তি তারপরেও যদি থেকে যায়, তবে আমার করজোড়ে মাফ চাওয়া ছাড়া কিছু করার নেই। এছাড়া ভুলত্রুটি নিশ্চয় আরো অনেক রয়ে গেছে। তাদের সব দায় আমারই। লেখাগুলো তৈরি করায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জন উৎসাহ জুগিয়েছেন। কেউ কেউ একাধিক লেখায়। বিশেষভাবে মনে করি ছায়ানটের সন্জীদা খাতুন, বাংলা একাডেমীর শামসুজ্জামান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের বেগম আকতার কামাল ও ভীষ্মদেব চৌধুরী, কালি ও কলম পত্রিকার আবুল হাসনাত, ঋতপত্র কাগজের অরুণ সেন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আতিউর রহমানের নাম। এঁদের সবার কাছে আমি ঋণী। নানা প্রসঙ্গে কবি-অধ্যাপক সৌভিক রেজার সঙ্গে আলোচনা করে আমি উপকৃত হই। ইদানীং সবসময়। এই কথাটা বারবার সবাইকে জানাই। আমার ভ্রাতুষ্পুত্রী প্রাপ্তি মা-সোনা, এখনো খুব ছোট, আমার ওপর খবরদারি করে। লেখায় না বসে এমনি এমনি সময় কাটালে দূরে থেকেও রাগ করে। তাকে আদর ও স্নেহাশীর্বাদ। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন কাইয়ুম চেীধুরী। পাুলিপি ছাপার যোগ্য করেছেন প্রকাশক আবুল খায়ের। আমি কৃতজ্ঞ তাঁদের সবার কাছে।