দানাকিল ডিপ্রেশন নামে পরিচিত অত্যন্ত দুর্গম একটি জায়গার অবস্থান ইথিওপিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০২ ফুট নিচে, মরুধূসরে ভূভাগের তাপমাত্রাও ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। ভ্রমণবৃত্তান্তের সূত্রপাত হয় ওখানকার ট্রেডিং পোস্টের একটি সরাইখানায়। অতঃপর পাঠকেরা লেখকের সঙ্গে সফরসঙ্গী হয়ে পৌঁছান যুদ্ধবিগ্রহ ও সামাজিক সংঘাতে বাস্ত্তচ্যুত শরণার্থীদের শিবিরে। বর্ণাঢ্য পাথরের তালাশে জনাকয়েক পর্যটকের মরুভূমিতে খোঁড়াখুঁড়ির তৎপরতাও পাঠককে কৌতূহলী করে। পরবর্তী এপিসোডগুলোতে বর্ণিত হয় লাভা লেপ্টানো প্রান্তরে পায়ে হেঁটে, মরুচারীদের গ্রাম অতিক্রম করে বেসক্যাম্পে পৌঁছানোর ঘটনা। যাত্রাবিরতির পর হরেক দেশ থেকে আসা পর্যটক ও ট্র্যাকারদের সঙ্গে মিলেঝুলে লেখক শরিক হন ডেজার্ট ট্র্যাকে, গন্তব্য—উদ্গিরণে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি অ্যারতে আলে। নিশিরাতের আঁধারে কপালে হেডল্যাম্প বেঁধে অবশেষে পৌঁছান খনিজ তরলের জ্বলন্ত বিকিরণে দীপ্ত লাভা সরোবরের রিজে। তীব্র উত্তাপ উপেক্ষা করে লাভাকুণ্ডের প্রান্তিকে জড়ো হওয়া হরেক দেশের পর্যটকদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ায় লিপ্ত হন। খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়ে পরদিন রওনা হন দূরের এক লবণহ্রদের দিকে। সফরের উপসংহারও হয়ে ওঠে অনুভবের অভিঘাতে স্মৃতিবিধুর।
মঈনুস সুলতান
মঈনুস সুলতান একাধারে কবি ও গল্পকার। ভ্রমণ কাহিনী লিখে খ্যাতি অর্জন করেছেন। মঈনুস সুলতানের জন্ম ১৯৫৬ সালে, সিলেট জেলার ফুলবাড়ী গ্রামে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যাস চুসেটস-এ থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিষয়ে ডক্টরেট করেন। খন্ডকালীন অধ্যাপক ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস এবং স্কুল অব হিউমেন সার্ভিসেস-এর। ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকার ভিজিটিং স্কলার ছিলেন। শিক্ষকতা গবেষণা ও কন্সালট্যান্সির কাজে বহুদেশ ভ্রমণ করেছেন।