মুসলিমসভ্যতায় যেসব জ্ঞানের উদ্ভব ঘটে, তার মধ্যে ইলমে কালাম অন্যতম। ইলমে কালাম যেমন আকিদার আলোচনা করে, পাশাপাশি কীভাবে আকিদা ব্যাখ্যা ও প্রমাণ করা হবে, সংশয় অপনোদন করা হবে, সে বিষয়েও সমানভাবে আলোকপাত করতে চেষ্টা করে। ইলমে কালামকে ধরা যায় দর্শন-ধর্মতত্ত্ব-জ্ঞানতত্ত্বের মুসলিম বিকল্প হিসেবে, কাজেই এর গুরুত্ব অপরিসীম।
সালাফ-সাহাবিরা আকিদা বিষয়ে বিতর্ক অপছন্দ করতেন। বিরত থাকতেন যুক্তি-প্রমাণ-রদ-কেন্দ্রিক আলোচনা থেকে। একটা পর্যায়ে দেখা গেল ধার্মিক লোকেরা রাসুলের আক্ষরিক ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট থাকলেও সমাজের সহজ-সরল অংশ বিজাতীয়-বিভ্রান্ত লোকেদের প্রভাবে সংশয়গ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। কাজেই আলেমগণ ইলমে কালামকে ওষুধ হিসেবে আখ্যা দিতে শুরু করেন।
সুস্থ ব্যক্তি ওষুধ খেলে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে, অসুস্থ ব্যক্তির জন্য ওষুধের কোনো বিকল্প নেই। জনসাধারণের আকিদা বিষয়ক তর্ক-বিতর্ক জানার প্রয়োজন নেই, তবে যারা সংশয়গ্রস্ত, তাদেরকে অবশ্যই যুক্তি-প্রমাণের কথা বলতে হবে। আলেম-তালিবে ইলমদেরকে ইলমে কালামের সাথে পরিচিত হতে হবে। একটা রাষ্ট্র যেমন সামরিক আক্রমণের মুখে পরাজিত হতে পারে, একইভাবে নিরীহ সাংস্কৃতিক আগ্রসনের মুখেও পরাস্ত হতে পারে। কাজেই ইলমে কালাম জানার বিকল্প নেই।
বাংলাভাষায় ইলমে কালাম বিষয়ক খুব বেশি বই নেই। খালেদ সাইফুল্লাহ রাহমানি রচিত আসান ইলমে কালামের বাংলা অনুবাদ এই শূন্যতা পূরণ করবে বলে আশা রাখছি।