গল্পে উঠে আসা ঘটনা তুচ্ছ বা প্রগাঢ় যা-ই হোক না কেন লেখকের দেখার ও দেখানোর দুর্লভ মুনশিয়ানাই একটি ছোটগল্পের পূর্ণতা প্রাপ্তির অতুল উৎস। এই বিচারে, নিশ্চিত বলা যায়, দিলওয়ার হাসান সেই সাহিত্য শিল্পী যিনি তৃতীয় নয়, চতুর্থ নেত্রের অধিকারী। বিপুল অভিজ্ঞতা, গভীর গহন সরস দেখার চোখ, সাহিত্য পাঠ-জীবনপাঠের মিলিত এক বাস্তব কল্পনার জগতের এক আশ্চর্য ভূগোল তৈরি করেছেন তিনি। হাসান তার গল্পের চরিত্রের বহিরাঙ্গই শুধু আঁকেন না, তাদের ভেতরটাও উন্মোচন করে দেখান। সেখানে নারীর প্রতিও তার সংবেদশীলতা উপলদ্ধি করা যায়। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ তার গল্পে রূপায়িত হয়েছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে।
প্রথম গল্পগ্রন্থ থেকে তিনি ক্রমশ নিজেকে রূপায়িত করেছেন গদ্যশৈলী এবং গল্প নবয়নের কৃৎ কৌশলে। কাহিনি বর্ণনের মোহজাল ছিন্ন করে তিনি কিঞ্চিৎ প্রতীকী। পাঠককে এই গল্পগ্রন্থের প্রথম থেকে শেষ গল্পটি পাঠে আকৃষ্ট রাখবে কেবল মুগ্ধতার আবেশে নয়Ñগল্পে বিধৃত ঘটনা ও অঙ্কিত চরিত্রগুলোর সুবাদে আমাদের চলমান সমাজের চালচিত্রটিকে ছকে নেওয়ার সচেতন আগ্রহও।