অনামিকা রঘুকে বলতাে- তুমি কি হাসতে জানাে না। অন্তত ছবি তােলার সময় একটু কৃত্রিম হাসি দাও। রঘু কিছু বলতাে না। রঘু শুধু ভাবতাে হয়ত অনামিকা জানে না; হাসি প্রতিটি মানুষের একান্ত খােরাক। নিজের মনের আপন ইচ্ছা কিংবা প্রিয় মানুষ যখন ভালাে থাকে তখন হাসি আসে। দেখতে আট-দশটা মানুষের মতাে রঘু চরিত্রের ভিতরে বাস করে আরেক রঘু । পােশাক-আশাক, চলনে বলনে দেখতে ও ভাবতে উদ্ভট মনে হলেও যান্ত্রিক শহর ঢাকায় তারও একটি স্বপ্ন আছে। কি সেই স্বপ্ন- যে স্বপ্ন তাকে দিনের পর দিন ক্লান্ত শরীর নিয়েও পায়ে হাঁটতে ক্যালসিয়াম জুগায়? জীবনের থেমে যাবে, তাই বলে-একটা অন্ধকারের ভিতর দিয়ে! কি আর হবে? রঘুর- চলার পথ পরিবর্তন, চেনা মানুষগুলাে অচেনা। এক কথায় শেষ হয়ে যাবে। কেউ মনে রাখবে না- এই রঘু আর রঘুর প্রজাপতিকে। আজ অন্ধকারকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সমস্ত পৃথিবীটা যেন রঘুর সাথে বলছে- 'হ্যাঁ অন্ধকার, তুমি এসাে। জীবন প্রদীপের শেষ রেখা টেনে দাও সুন্দরভাবে, সুন্দরের মাঝে আমি ফুল হয়ে যেন ফুটতে পারি পরে কিংবা এক আলােকবর্ষ পরে। আমি আজ থেকে তােমার প্রতীক্ষায় অন্ধকার তুমি এসাে।
কিন্তু অন্ধকার আসে না, একটি গল্পের ভিতর আরেক গল্প। যে গল্পটি সমাজ বাস্তবতার দর্পণ হয়ে পাঠকের করােটিতে বারবার প্রশ্ন জাগাবে, ভাবাবে এবং পাঠক এ উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠার শেষ লাইন পড়ে গল্পের বাকী অংশ খুঁজবেন তার চারপাশে।
জামশেদ নাজিম
জামশেদ নাজিম। পেশায় সাংবাদিক। মূলত পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সমাজের নানান অসঙ্গতি ও অবক্ষয়ের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। সেসব ঘটনাগুলোই যেন 'গল্পটির বাকি অংশ'-এ তুলে ধরেছেন তিনি। এটি তার প্রকাশিত দ্বিতীয় উপন্যাস। প্রথম উপন্যাসের নাম 'একটি গল্পের গল্প'।