বরিশালের নদী, জোনাকি ছেড়ে তাঁকে পা রাখতে হয়েছে আদিম সাপের মতো ছড়িয়ে। থাকা কলকাতার ট্রামলাইনের ওপর । পৃথিবীর দিকে তিনি তাকিয়েছেন বিপন্ন বিস্ময়ে । বলেছেন সন্ধ্যায় সব নদী ঘরে ফিরলে থাকে অন্ধকার এবং মুখোমুখি। বসবার নাটোরের এক নারী। জানিয়ে দিয়েছেন জ্যোৎস্নায় ঘাই হরিণীর ডাকে ছুটে আসা, শিকারির গুলিতে নিহত হরিণের মতো আমরা সবাই। সস্তা বোর্ডিংয়ে।উপার্জনহীনভাবে দিনের পর দিন কুঁচো চিংড়ি খেয়ে থেকেছেন। তবু পশ্চিমের মেঘে দেখেছেন সোনার সিংহ। পিপড়ার মতো গুটি গুটি অক্ষরে হাজার হাজার পৃষ্ঠা। ভরেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ডায়েরি লিখে। সেগুলোর সামান্য শুধু জনসমক্ষে এনেছেন জাদুকরের রুমালের মতো, বাকিটা গোপনে তালাবন্দী করে রেখেছেন কালো ট্রাঙ্কে। বাংলা সাহিত্যের প্রহেলিকাময় এই মানুষ জীবনানন্দ দাশের সঙ্গে এক নিবিড় বোঝাপড়ায় লিপ্ত হয়েছেন এ সময়ের। শক্তিমান কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামান তার। একজন কমলালেবু উপন্যাসে।
শাহাদুজ্জামান
ব্যতিক্রমী এবং নিরীক্ষাধর্মী গ্রন্থ রচনার মধ্য দিয়ে শাহাদুজ্জামান মননশীল বাংলা কথাসাহিত্যে তাঁর অনিবার্য অবস্থানটি ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছেন। গল্প, উপন্যাস ছাড়াও প্রবন্ধ, গবেষণা, ভ্রমণ এবং অনুবাদ সাহিত্যেও রয়েছে তাঁর উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ।
শাহাদুজ্জামান পড়াশােনা করেছেন মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে। পরবর্তীকালে তিনি নেদারল্যান্ডস-এর আমস্টার্ডাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন চিকিৎসা নৃবিজ্ঞানে। পেশাগতভাবে তিনি ডাক্তার হিসেবে কাজ করেছেন উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক-এর গ্রামীণ স্বাস্থ্য প্রকল্পে, পরে অধ্যাপনা করেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথ’এ। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যের গ্লাসগাে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা এবং অধ্যাপনায় যুক্ত আছেন। শাহাদুজ্জামানের জন্ম ১৯৬০ সালে ঢাকায়।