চার বছর আগে আমার বন্ধু ঢাকা থিয়েটারের নাসিরউদ্দিন ইউসুফ যখন সাংবাদিকদের বললাে, একাত্তরের যীগু' গল্পটা নিয়ে ছবি বানাবে, তখন কোন এক পত্রিকায় খবর বেরিয়েছিলাে। এটা নাকি নকল গল্প, কলকাতায় নাকি '৮৭ সালে একটা নাটক হয়েছে-ঠিক এরকম। আমি বুঝতে পারলাম না কলকাতায় ৮৭ সালে যে এ রকম নাটক লেখা হবে সেটা আমি '৭৩ সালে জানলাম কি ভাবে! আমাদের অনেক সমালােচক বা সাংবাদিক এটা কখনও ভাবতেই পারেন না যে, কলকাতার লেখকরাও আমাদের দ্বারা প্রভাবিত বা অনুপ্রাণিত হতে পারেন এবং সুযােগ পেলে আমাদের লেখা নকলও করতে পারেন। ছবি করার সময় পরিচালক নাসিরউদ্দিন ইউসুফ আমাদের বলেছিলাে, গল্পটা বড় করে একটা চিত্রনাট্য লেখার জন্য। ওর কথা মতাে আরও কয়েকটা চরিত্র মূল গল্পের সঙ্গে যুক্ত করে একটা চিত্রনাট্য আমি লিখেছিলাম বটে ওটা পরিচালকের পছন্দ হলাে না। আমার বাড়তি গল্পের কিছুটা রেখে ও নিজের মতাে করে কাহিনী বাড়ালাে, যেটা আবার আমার পছন্দ হলাে না। তবু ওটা মেনে নিতে হয়েছে, কারণ ছবিতে পরিচালকই সব। ভেবেছিলাম একাত্তরের যীশু'র নতুন সংস্করণ যখন বেরুবে তখন আমি পরে যা এ গল্পের সঙ্গে যােগ করেছিলাম সেটা রেখে দেবাে। লিখতে গিয়ে মনে হলাে মূল গল্পটা ছােটদের জন্য লেখা, আর আমি ছবির জন্য যা বাড়িয়েছিলাম তার সবটুকু ছােটদের গল্পের উপযােগী নয়। তাই এখানে শুধু বােবা মেয়েটার অংশটুকু যােগ করণাম। ছবিতে পরিচালক মেয়েটাকে মেরে ফেলেছেন, আমি কিন্তু মারতে চাইনি। আমি দেখাতে চেয়েছিলাম এই মেয়েটাই আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক। চিত্রনাট্য আমার পছন্দ মতাে না হলেও একাত্তরের যীশু' ছবি হিসেবে দেশে বিদেশে প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছে। এর জন্য নাসিরউদ্দিন ইউসুফ আমাদের সকলের অভিনন্দন পাওয়ার যােগ্য। এ বইয়ের অন্য গল্পগুলাে '৬৮ থেকে '৭৩ সালের ভেতর লেখা ছাপা হয়েছে তখনকার 'কচি ও কাঁচা ও টাপুর টুপুর পত্রিকায়। এত সুন্দর পত্রিকা আর হলাে না...