আজিম নামের একজন স্বল্পশিক্ষিত কৃষক বাড়িতে যুবতী স্ত্রী এবং ১১ মাসের কন্যা সন্তান পরিকে রেখে মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের জন্য ভারতে চলে যায়।
যুদ্ধ শেষে বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরে প্রতিবেশি এক চাচার কাছে সে জানতে পারে গত ভাদ্র মাসের বন্যার সময় সারা গ্রাম যখন বানের পানিতে ডুবে ছিল তখন কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে তার কন্যা পরি মারা গেছে। দুঃখের কাহিনি এখানেই শেষ না। মিলিটারীর ভয়ে গ্রামের সব লোক পালিয়ে থাকায় তাকে কবর দেওয়াও সম্ভব হয়নি। একখন্ড কাপড়ে জড়ায়ে অভাগা মা তাকে বানের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছিল।
এই কথা শুনে আজিম চিৎকার করে বলতে থাকে কি বলেন চাচা? এই দুঃসহ বেদনা আমি কেমনে সইবো। তারপর পাগলের মতো প্রলাপ বকতে বকতে সে বলতে থাকে যুদ্ধে বন্ধু আবুলসহ কত সহযোদ্ধা শহীদ হলো। আমি কেন শহীদ হলাম না। তাহলেতো আমাকে এতো অসহ্য যন্ত্রনা ভোগ করতে হতো না। এই হৃদয়ভাঙা ব্যথা আমি কেমনে সইবো। আমার মতো অভাগা মুক্তিযোদ্ধা বুঝি এই বাংলাদেশে দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে না।
চাচা বলে, কি বলো বাবা। তুমি অভাগা হতে যাবে কেন? দেশকে ভালোবেসে দেশের জন্য যুদ্ধ করে তোমাদের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধারাই স্বাধীন বাংলাদেশ নিয়ে এসেছে। তুমি আমাদের গ্রামের গর্ব।
চাচার কথাতেও আজিমের অবুঝ মন বুঝ মানে না।