ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ এদেশের সংগ্রামী ছাত্রসহ সাধারণ মানুষকে কাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে হয়েছে, তার প্রেক্ষাপট বইটিতে উঠে এসেছে। এদেশের মানুষ লড়াই করেই দেশটি স্বাধীন করেছে, সে সম্পর্কে কারো কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমাদের শত্রুদের চেহারা, তাদের রাজনৈতিক দর্শনের প্রেক্ষাপটটি কিছুটা হলেও বইতে উঠে এসেছে। দেখা যায় স্বয়ং মোহাম্মদ আলী জিন্নাহও সাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থার প্রতি খড়গহস্ত ছিলেন। তাই জিন্নাহর গভর্নর জেনারেলশিপ পদটি গ্রহণ করার পর সংবিধান লঙ্ঘনের ইতিহাস শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রি লিয়াকত আলি খানের সব সাংবিধানিক অধিকার নিজের দখলে নিযে ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে রেখেছিলেন। তাই তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া জিন্নাহর এই পদক্ষেপকে পাকিস্তানের প্রথম ‘ক্যু’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন। মানিক মিয়া মিথ্যা বলেননি। অসুখী লিয়াকত আলি খান জিন্নাহর মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রির সাংবিধানিক দায়িত্ব পেয়ে নিজেও বেগরোয়া ও প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠেন। তাই আমি দেখেছি, চব্বিশ বছরের পাকিস্তানে ৬টি প্রতিবিপ্লব সংঘটিত হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ক্যু করেন গোলাম মোহাম্মদ, চতুর্থ ক্যু’র নায়ক জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা, পঞ্চম ক্যু করেন জেনারেল আইয়ুব খান এবং ষষ্ঠ ও শেষ ক্যুটি করেন জেনারেল ইয়াহিয়া খান। তাই হিসাব করলে দেখা যায়, প্রতি চার বছরে পাকিস্তানে একটি করে ক্যু হয়েছে।