একাত্তরে রাজশাহী উপশহর: গণহত্যা, নির্যাতন ও গণকবর গ্রন্থটি রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধের অনন্য প্রামাণ্য দলিল। ১৯৭১ সালে রাজশাহী উপশহরে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিনি ক্যান্টনমেন্ট। সেখান থেকেই সাধারণ মানুষকে হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনা আর অপারেশন পরিচালনা করত তারা। ৪ এপ্রিল ১৯৭১ রাজশাহী উপশহরে সংঘটিত গণহত্যায় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারান।
তাদের হত্যা করে উপশহর খেলার মাঠ সংলগ্ন ঠিকাদারদের নির্মিত গর্তে ফেলে রাখা হয়। উপশহরের ১৬৯, ১৭০, ১৭১ নম্বর বাড়ি ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দোসর কতিপয় বিহারি ও রাজাকারদের টর্চার সেল। শহর ও আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন ধরে এনে সেখানে দিনের পর দিন আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যা করা হতো। রাজশাহী শত্রুমুক্ত হওয়ার পর উপশহর ও ক্যান্টনমেন্টের বেশকিছু বাংকার থেকে শত শত নর-নারীর কঙ্কাল পাওয়া যায়। গোটা উপশহর তখন যেন বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছিল।
একাত্তরে রাজশাহী উপশহরে বসবাসরত বাঙালির অবরুদ্ধ জীবন বিশেষত মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সময়ে নির্যাতিত ও গণহত্যার শিকার হয়ে যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে এখনো যাঁরা অসহায়ভাবে বেঁচে আছেন, বীরাঙ্গনা ও শহীদ— যাঁদের মেলেনি কোনো সম্মান ও স্বীকৃতি, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবার, এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজড়িত স্মৃতিচিহ্নগুলোর তালিকা প্রণয়ন ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে এই গ্রন্থটি সহায়ক হবে।