"একা" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা:
একাত্তরের কিশোরী রওশনের সময়ের দেখা জীবনের ঢেউ ২০১২ সালের স্রোতে গিয়ে মিশলো শেষে। সেই স্রোতটি হলো রওশনের নাতনি এই যুগের অর্পিতা ও রূপকথার একাকীত্বের স্রোত। তার মাঝে বহমান রওশনের কন্যা সন্তান মুক্তি, তৃপ্তি, জরীর আশির দশকের সময়ে আসা প্রবঞ্চনা আর একাকীত্বের জার্নাল।
নারীমাত্ররই এমন সব কথা আছে, যা বলতে গেলেই চুপ করানো হয়। তাদের একা বিপদের গল্পগুলো একা। সেই পথ চলাটায় তারা দেখে তারা একা। তারা তবুও চাইলেই একা সেই পথ চলতে জানে। দিনশেষে এই উপন্যাসের নারীরা প্রতিবাদী, সাহসী, সফল, স্বপ্নবান, আত্মনির্ভরশীল। এই নারীরা বার্তা দেয়, সময় পরিস্থিতি যাই থাকুক, নারী চাইলেই পারে। নারী পারে, কারণ তাকে যেতে হয় তার নারী হওয়ার কারণে আসা অতিরিক্ত ভয়ংকর বিপদ কাটিয়ে। গল্পগুলো রওশনের, মুক্তির, তৃপ্তির, জরীর, রূপকথার, অর্পিতার... গল্পগুলো আমাদের সমাজের প্রত্যেকটা মেয়ের। গল্পগুলো সব একটা সুতোয় বেঁধে সৃষ্টি হয়েছে “একা” উপন্যাসের। পাঠক কখনও শিউরে উঠবেন, কখনও নিজের অজান্তে চোখ ভেজাবেন, কখনও দৃঢ় প্রত্যয়ী হবেন জীবনপথে না থেমে এগিয়ে যাওয়ার।
মৌলী আখন্দ
পৃথিবীতে কিছু মানুষ বুকের গহিনে বয়ে বেড়ায় এক সমুদ্র কথা কিন্তু সামনে থাকা মানুষটিকে বলবার মতো কিছু খুঁজে না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটায় নির্বাক নিশ্চুপ। মৌলী আখন্দ সেইসব অসামাজিক নিভৃতচারী মানুষদের মধ্যে একজন। তাঁর জন্ম ১৯৮৬ সালে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বেড়ে ওঠা ও বসবাস ঢাকায় । এক কন্যার জননী। পড়াশোনা হলিক্রস স্কুল ও কলেজে। পেশায় তিনি একজন চিকিৎসক। শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল থেকে এম বি বি এস পাস করে মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ে মাস্টার্স করেছেন। বর্তমানে শিশু মেডিসিন বিষয়ে কর্মরত । নেশা বই পড়া, উঁইপোকার মতো পুরির ঠোঙা থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পর্যন্ত সবই পড়তে ভালোবাসেন। স্বপ্ন দেখেন বৈষম্যমুক্ত পৃথিবীর, যেখানে নারী পুরুষ ধনী গরিব সবাই পাবে সমান সুযোগ ও অধিকার। লেখকের এ পর্যন্ত প্রকাশিত বই “একা”, “ইট রঙের বাড়ি”, “যে জীবন দোয়েলের”, “এখানে রোদ নেই”, “আলোকের এই ঝরনাধারায়”, “সর্পিল”, “আমাদের মেঘবাড়ি”, “নির্মোক”, “স্বপ্নচূড়া” ও “শঙ্কিত শর্বর”। তাঁর সম্পাদিত গল্প সংকলন “শূন্যপুর” বোদ্ধা মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। প্রথম প্রকাশিত বই “একা”র জন্য অর্জন করেছেন পাললিক সৌরভ তরুণ লেখক সম্মাননা ২০২১ এবং “এখানে রোদ নেই” বইটির জন্য ভূষিত হয়েছেন ২০২১ চলন্তিকা সাহিত্য প্রতিযোগিতায় সেরা উপন্যাসের পুরস্কারে।
মৌলী বিশ্বাস করেন গল্প হলো জীবনের আয়না । সেই আয়নায় জীবনের স্পষ্ট ছবি তুলে ধরতে প্রতিদিন আয়নাটা মুছে পরিষ্কার করেন তিনি। তাই লিখে যান অবিরাম ।