ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ রাফিন, অর্চি, জুহান, তৌশি আর সাবাব-এই পাঁচজন একদিন সিদ্ধান্ত নিল, একটা গোয়েন্দা দল খুলবে তারা। নামও ঠিক করল একটা-ডিটেকটিভ ফাইভ।তারপর গোপনে তারা একটা করে চিঠি পাঠাল তাদের এলাকার প্রতিটি বাসায়। হ্যালো.... তোমার বাসায় চুরি হতে পারে যে কোনো দিন!হতে পারে ডাকাতিও। ভূত কিংবা কোনো অশরীরী আত্মার ভয়ে তোমার চোখ-মুখ শুকিয়ে থাকতে সারাদিন। পাওনাদারও যন্ত্রণা দিতে পারে তোমাকে, আবার পাওনা টাকা পেতেও মাথার ঘাম পায়ে ঝরতে পারে তোমার!দখল হয়ে যেতে পারে তোমাদের বাড়িটা; ছিনতাই হয়ে যেতে পারে তোমার টাকা-পয়সা, দামী জিনিসপত্র; এমনি তোমার মান-সম্মানও। কতরকম সমস্য আছে!সমস্যা যত জটিলই হোক, জাস্ট আমাদের একটু জানাবে, তারপর তুমি নির্ভার। সমাধান আমাদের হাতে। আমরা তোমার সব সমস্যা সমাধান করে দেব, তা সে যত জটিলই হোক। বিলিভ আস, ইনজয় ইউর লাইফ।ডিটেকটিভ ফাইভ। দু দিন পর তারা বেশ কয়েকটা মেইল গেল, ভয়ংকর ভয়ংকর সমস্যা সব মেইল। প্রাথমিকভাবে তিনজনের সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত নিল তারা। প্রথমটাই খুব কঠিন সমস্যা-বুড়ো এক দম্পতি পুরনো এক বাসায় থাকেন, হঠাৎ একটা ভূত দেখা যায় তাদের বাসায় মেয়ে ভূত। ভীষণ যন্ত্রনা সেই ভূতটা। সেই সমস্যার সমাধান করার আগে দুর্ধর্ষ এই পাঁচ গোয়েন্দা নিজেরাই একটা সমস্যায় জড়িয়ে পরে। কিছু জিনিস পড়ে পায় তারা রাস্তায়, অবৈধ জিনিস, বিপদজনক জিনিস! বুক কাঁপতে থাকে তাদের! কয়দিন পর আরো তিনটা মেইল পায় তারা। কোনো সমস্যা নেই এগুলোতে, কিন্তু হুমকি আছে, আছে খারাপ কথাও! তারপর?
সুমন্ত আসলাম
আজন্ম লালিত স্বপ্নকে যে সার্থক করে তুলতে পারে, সে-ই সত্যিকারের ভাগ্যবান। আমরা বন্ধুরা তাই সুমন্তকে সেসব হাতে গােনা ভাগ্যবানদের একজন বলে মানি, গর্বিত হই সুমন্তকে নিয়ে; হিংসায়ও পুড়ি কখনাে কখনাে । কারণ একটাই—লেখালেখির স্বপ্নটাকে বিফলে যেতে দেয়নি সুমন্ত আসলাম । বরং শখের লেখালেখির সঙ্গে সখ্য গড়ে সে এখন আদ্যোপান্ত একজন পাঠকপ্রিয় লেখক । ২০০১ সালে ‘স্বপ্নবেড়ি’তে গল্প লেখায় যে মেধার স্বাক্ষর সে রেখেছিল, তা উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমানভাবে । বন্ধু বলে সমালােচনার কাচি-ছুরির হাত থেকে রেহাই মেলে না। লেখক সুমন্তর কিন্তু সব কিছুর শেষে প্রতিবারই হার মানতে হয়। আমাদের, মুগ্ধ হতে হয় তার লেখায় । অপেক্ষায় থাকতে হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পের, কিংবা অন্য কোনাে লেখার। কিংবা আসন্ন বইমেলার—কখন প্রকাশিত হবে সুমন্তর নতুন বই। দৃপ্ত সাহসী ভঙ্গি, চিবুকের সজীব ঔদ্ধত্য দেখে কেউ কেউ অহঙ্কারী বলে ভুল ভাবে সুমন্তকে । কিন্তু আমরা জানি, ভেতরের মানুষটা বড় বেশি সরল, আবেগে টলােমলাে-কখনাে যেন সে দন্তন্য রূহমান, কখনাে বা রাশীক । তাই তাে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে সে গড়ে তােলে ‘Childream Society',' তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টায় তাদের সাথেই মিশে যায় সে প্রতিনিয়ত। শুধু স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা নয়, অন্যের মধ্যে স্বপ্নের শিখা জ্বালিয়ে দেয়ার অবিশ্বাস্য এক ক্ষমতা আছে সুমন্তর। তাই নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি একদল কিশাের-কিশােরী ঘিরে থাকে তাকে । অনুপ্রেরণা মেনে তার মতােই হতে চায় তারা। নিজের টুকরাে টুকরাে স্বপ্ন-সাধ তাদের মধ্যে বুনে দিয়ে ঘুরে ফেরে সুমন্ত, ফেরে নিজের ছােট্ট জগন্টাতে । তাকে দেখে আনন্দে গা ঘেঁষে আদর জানায় পােষা সাদা বেড়ালটা, মাছগুলাে খলবল করে ওঠে অ্যাকুরিয়ামে, এমনকি তার অপেক্ষায় থাকা লেখালেখির টেবিলটাও যেন হেসে ওঠে। একবার-সুমন্তের হাতে নতুন কোনাে চরিত্রের, নতুন কোনাে গল্পের জাল বােনা দেখবে বলে!