সিলেটে একটা প্রবাদ আছে, ‘পানি কাটলে দুই ভাগ হয় না। পাশাপাশি দুই দেশে একই বাতাস বয়, এপারের মেঘ ওপারে গিয়ে বর্ষণ করে আসে। দু'দেশেই সুন্দরবন, দু'দেশের আকাশেই এক জাতের পাখি। এসব তাে জানা কথা। কিন্তু সীমান্তের এক দিকের মানুষের বিপদে-আপদে কী অন্যদিকের মানুষ ব্যথিত-বিচলিত হবে চিরকাল? মুখের ভাষায় মিল আছে বলেই কি অন্তরের যােগাযােগ কোনােদিন বিচ্ছিন্ন হবে না? প্রকৃতি সম্পর্কে যত নিশ্চিন্ত উক্তি করা যায়, মানুষ সম্পর্কে তা যায় না। রাজনৈতিক কারণে বঙ্গভাষী রাজ্যটি দ্বিখণ্ড হয়েছে। বাঙালীরা এখন দুটি আলাদা রাজ্যের নাগরিক, এটা একটা বাস্তব সত্য। সেই রাজনীতি কখনাে দু'দেশের মধ্যে দূরত্ব অনেক বাড়িয়ে দেবে কি না, মাঝখানের প্রাচীর হঠাৎ আরও উঁচু ও দুর্ভেদ্য হবে কিনা, তা কে জানে? আমরা দুরন্ত আশাবাদী হতে পারি, কিন্তু ভবিষ্যদ্রষ্টা নই।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
একজন বাঙালি পাঠক হয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে এড়িয়ে যাওয়া ভীষণ শক্ত। প্রথম আলো থেকে নীরা, কবিতা থেকে গল্প,উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনী, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, দুহাতে লিখেছেন।কেবল লিখেছেন বললে ভুল হবে! লিখেছেন, আলোচিত হয়েছেন,সমালোচিত হয়েছেন কিন্তু অসংখ্য পাঠকের হৃদয়ে থেকেছেন। অসংখ্য পাঠক তাকে তুলে নেয়, পাঠ করে।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসাবে সর্ববৈশ্বিক বাংলা ভাষার জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন।
জন্ম: ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৪, ফরিদপুর জেলা
মারা গেছেন: ২৩ অক্টোবর, ২০১২, কলকাতা, ভারত
স্বামী বা স্ত্রী: স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় (বিবাহ. ১৯৬৭–২০১২)
সন্তান: সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার: আনন্দ পুরস্কার (১৯৭২, ১৯৮৯); সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার (১৯৮৫)
কুইজ: সুনীলের লেখা প্রথম বই কোনটি?
শামসুর রাহমান
নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানা থেকে আরেকটু ভেতরে মেঘনাপাড়ের গ্রাম পাড়াতলী। কবি শামসুর রাহমানের পৈতৃক নিবাস। তবে জন্মেছিলেন ঢাকা শহরের ৪৬ নম্বর মাহুতটুলির বাড়িতে। তারিখ ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর। দশ ভাইবােনের মধ্যে জেষ্ঠ্য তিনি।
১৯৪৮ সালে যখন তার বয়স মাত্র ১৯ বছর তখন মননের গহীন তল্লাটে কবিতার যে আবাদভূমি গড়ে উঠেছিল, তা কেবল উর্বরই হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে নলিনীকিশাের গুহের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতা। তারপর দে ছুট আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পেয়েছেন আদমজী পুরস্কার (১৯৬৩), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯), একুশে পদক (১৯৭৭), সাংবাদিকতার জন্যে পেয়েছেন জাপানের মিৎসুবিশি পদক (১৯৯২), ভারতের আনন্দ পুরস্কার (১৯৯৪) ছাড়াও বহু পুরস্কার। তিনি ভারতের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি লিট উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। ‘মর্নিং নিউজ’-এ সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে ১৯৫৭ সালে যে চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন, একই পেশায় থেকে ১৯৮৭ সালে দৈনিক বাংলার সম্পাদক পদ থেকে তিনি চাকরিতে ইস্তফা দেন। জীবনে উত্থান-পতন, দারিদ্র্য, হতাশার ঘুর্ণিপাকে দুলেছেন, তবু খেই হারাননি জীবন, সাহিত্য ও কবিতার পাঠ থেকে।
মূলত কবি হলেও সাহিত্যে তাঁর কাজ বহুমাত্রিক। অনুবাদ সাহিত্য থেকে গদ্যের বিভিন্ন প্রশাখায় বিচরণ করেছেন তিনি। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট ৭৬ বছর বয়সে তিনি। মৃত্যুবরণ করেন।