বর্তমানে জিনা-ব্যভিচারের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। ধর্ষণের পর খুনের ঘটনা তাে এখন প্রতিদিনের সাধারণ খবর। এই যে জিনা-ব্যভিচার, ধর্ষণের পর খুনের ঘটনা—এসব অপরাধের মূল সূত্রপাত কিন্তু দৃষ্টির অবৈধ। ব্যবহার থেকে চাই তা বাস্তবে সরাসরি দৃষ্টিপাত হােক বা কোনাে চিত্র কিংবা পর্দায় দৃষ্টিপাত হােক। কুদৃষ্টির ফলেই মানুষের মধ্যে কামনা-বাসনার আগুন দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে যার পরিণতিতে ঘটে নানা অন্যায়-অপরাধ। নিঃসন্দেহে দৃষ্টি শয়তানের বিষাক্ত তির; যে নিজের দৃষ্টিকে অবনত রাখে না, সে শয়তানের প্ররােচনায় সহজে পতিত হয়। পক্ষান্তরে যে নিজের দৃষ্টিকে অবনত রাখে, সে অনেক গুনাহ থেকে সহজে বেঁচে থাকতে পারে শয়তান তাকে কাবু করতে পারে না।
বলা বাহুল্য, ডিশ-ইন্টারনেটের সহজলভ্য এ সময়ে মানুষ অহর্নিশ দৃষ্টির খিয়ানত করছে। প্রিয় পাঠক, আমরা যেন কুদৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব এবং এর ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ পরিণতির ব্যাপারে ধারণা লাভ করে সর্তক হতে পারি; দৃষ্টিকে অবনত রেখে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারি—এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে রুহামা পাবলিকেশন প্রকাশ করেছে। শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিমের গ্রন্থের সরল অনুবাদ ‘দৃষ্টি শয়তানের বিষাক্ত তির।। ইনশাআল্লাহ, গ্রন্থটি সবার জন্য উপকারী হবে
শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম
ড. শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম। আরববিশ্বের খ্যাতনামা লেখক, গবেষক ও দায়ি। জন্মগ্রহণ করেছেন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তরে অবস্থিত ‘বীর’ নগরীতে বিখ্যাত আসিম বংশের কাসিম গােত্রে। তার দাদা শাইখ আব্দুর রহমান বিন মুহাম্মাদ বিন কাসিম আল-আসিমি আন-নাজদি রহ. ছিলেন হাম্বলি মাজহাবের প্রখ্যাত ফকিহ। তাঁর পিতা শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান রহ.ও ছিলেন আরবের যশস্বী আলিম ও বহু গ্রন্থপ্রণেতা। শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম জন্মসূত্রেই পেয়েছিলেন প্রখর মেধা, তীক্ষ প্রতিভা আর ইলম অর্জনের অদম্য স্পৃহা। পরিবারের ইলমি পরিবেশে নিখুঁত তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠেছেন খ্যাতনামা এই লেখক। আনুষ্ঠানিক পড়াশােনা শেষ করে আত্মনিয়ােগ করেন। লেখালেখিতে গড়ে তােলেন ‘দারুল কাসিম লিন নাশরি ওয়াত তাওজি’ নামের এক প্রকাশনা সংস্থা। প্রচারবিমুখ এই শাইখ একে একে উম্মাহকে উপহার দেন সত্তরটিরও অধিক অমূল্য গ্রন্থ। আত্মশুদ্ধিবিষয়ক তেইশটি মূল্যবান বইয়ের সম্মিলনে পাঁচ ভলিউমে প্রকাশিত তাঁর ‘আইনা নানু মিন হা-উলায়ি নামের সিরিজটি পড়ে উপকৃত হয়েছে লাখাে মানুষ। বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এই সিরিজের অনেকগুলাে বই। আজ-জামানুল কাদিম’ নামে তিন খণ্ডে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত গল্প-সংকলনটিও আরববিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি প্রাঞ্জল ভাষায় ছয় খণ্ডে রচনা করেছেন রিয়াজুস সালিহিনের চমৎকার একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এ ছাড়াও তাঁর কুরআন শরিফের শেষ পারার তাফসিরটিও বেশ সমাদৃত হয়েছে। আমরা আল্লাহর দরবারে শাইখের দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।