জীবনের রূপক হিসাবে নদী সততই দৃষ্টান্তস্বরূপ। এই উপন্যাসের পটভূমি পূর্ব বর্ধমান জেলার দক্ষিণ দামোদর অঞ্চল। দামোদর নদ যেমন বর্ষায় উদ্ভাসিত আর বর্ষান্তরে ম্রিয়মাণ, সময়ের ব্যবধানে এই ক্ষুদ্র ভূখণ্ডটির মানুষের জীবনও সেইরূপ। আপাত বৈশিষ্ট্যহীনতার অন্তরালে এই ভূখণ্ডের একটি অত্যন্ত শ্লাঘনীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে—উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র শান্তা যা অকস্মাৎ উপলব্ধি করে—বাংলা ও বাঙালীর গর্বের মঙ্গলকাব্যের মহাকবিগণের অতীত বিচরণভূমি এই অঞ্চল। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাহিত্যিক ক্ষেত্রে কিছু নক্ষত্রতুল্য মহামানবের আবির্ভাব নগরজীবন থেকে দূর অন্তরালে থাকা গ্রামীণ এলাকাটিকে অহংকারী করে তুলেছিল একদা—বর্তমান সময় ও প্রজন্ম তা বিস্মৃত হয়েছে। শান্তার চিন্তন ও কলমে সেই বিস্মৃতির আবরণ সরিয়ে অতীত উদ্বোধিত হয়, আর তা প্রাসঙ্গিক হয়ে এসে মানুষের ঘরবাড়ি ও জীবনের হাত ধরে আবহমান কাল।