গল্পকার অনায়াসে পাঠককে নিয়ে গেছেন আপন পটভূমিতে, যেখানে চরিত্রের আশা-উদ্দেশ্য-হর্ষ-বিমর্ষতা-দিগ্ভ্রান্তি পাঠকের নিজের অভিজ্ঞতায় চেনা মনে হবে। কিন্তু সেই চিরচেনাকে লেখক একরকম সতেজ বুদ্ধি আর সরস অন্তর্দৃষ্টিতে ধারণ করেছেন। লেখক নির্ভান ভালোবেসেছেন আলোছায়াময় প্রকৃতিকে, তাতে সন্নিবিষ্ট মানুষকে। গল্পগুলোর কোথাও অবিরাম উল বুনে যাওয়া যেকোনো নারী যেমন আছেন, তেমনি আছেন মিথলজির রানি পেনেলোপি। একদিকে আছে শক্তি ঔষধালয়ের কবিরাজ, আরেক দিকে ইতিহাসের পাতা থেকে মহানন্দাপারের ফকির শাহদানা। আছে হারিয়ে যাওয়া শৈশব-সম্পর্ক-দেশকে এমনকি সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশনকে খুঁজে ফেরা মানুষ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক পটপরিবর্তনে খেই হারিয়ে ফেলা মানুষ। গ্লোবালাইজেশন, বহু-সংস্কৃতির প্রভাব, অর্থনৈতিক বৈষম্যের মতো ইস্যু এসেছে চরিত্রগুলোর আন্তর টানাপোড়েনে। কুণ্ডলায়িত কোনো দীর্ঘ বর্তনীর মতো সাগুফতা প্রায়ই স্পর্শ করে গেছেন আজ আর গতকালকে, নির্মাণেই সীমাবদ্ধ করেননি চরিত্রকে—রীতিমতো যাপন করেছেন। একরকম প্লেফুল প্রোজ এই গল্পগুলোকে সুতায় বেঁধেছে, অজস্র সংলাপ যেখানে স্বগত, যতিচিহ্নও যেখানে চারিত্র।