বই নিয়ে কিছু কথা... দুশ্চিন্তা কী এবং আমাদের কতোটা ক্ষতি করতে পারে? ড. এ্যালেক্সিস ক্যারেল একবার বলেছিলেন, যারা দুশ্চিন্তার সঙ্গে মোকাবিলা কি করে করতে হয় একথা জানে না, তাদের তরুণ বয়সেই মৃত্যু ঘটে। বহু বছর আগে একদিন সন্ধ্যাবেলায় লেখকের এক প্রতিবেশী এসে তাঁর দরজায় ঘণ্টা বাজিয়ে ডেকে তাঁকে তাড়াতাড়ি সপরিবারে বসন্তের টিকা নিতে সনির্বন্ধ অনুরোধ করলেন। এই প্রতিবেশী ভদ্রলোকটি হলেন একজন সমাজসেবী। তার মতো এরকম আরো অনেক সেচ্ছাসেবক নিউইয়র্কের সব জায়গায় নাগরিকদের প্রতি এই আবেদন জানানোর জন্য ছড়িয়ে পড়েছে। জনসাধারণকে এই বসন্তের টিকা দেবার জন্য হাসপাতালে, দমকলে, থানায়, বড়বড় কারখানা প্রাঙ্গণে অসংখ্য কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। হাজার দুয়েক ডাক্তার ও নার্স রাতদিন অক্লান্তভাবে কাজ করে চলেছেন। এর মধ্যে নিউইয়র্কের আশি লক্ষ লোকের মধ্যে আটজন বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এই রোগে দুজন মারা গেছেন। এসব দেখে লেখক চিন্তা করলেন, এই বসন্ত রোগ যতটা না ক্ষতি করছে, তার থেকে হাজার গুণ বেশি ক্ষতি করছে দুশ্চিন্তাজনিত রোগ, কিন্তু কেউ এ ব্যাপারে সতর্ক করার জন্য কোনো ব্যবস্থা করেনি। দুশ্চিন্তার সঙ্গে মোকাবিলা না করতে পারলে অতি অল্প বয়সেই মৃত্যু ঘটে এই অভিমত বিখ্যাত নোবেল প্রাইজ বিজয়ী ডাক্তার এলেক্সিন ক্যারেলের। আর একজন অগ্রণী ডাক্তার ও. এফ. তাবার আমাদের জীবনের দুশ্চিন্তার কুপ্রভাব প্রসঙ্গে বলেছেন, ডাক্তারদের কাছে যত রোগী আসেন, তার মধ্যে সত্তর শতাংশ রোগী নিজেরাই নিজেদের রোগমুক্ত করতে সক্ষম হতেন, যদি তাঁরা তাঁদের জীবন থেকে অহেতুক দুশ্চিন্তা দূর করতে পারতেন। সকলেই যে অনাবশ্যক চিন্তা করছেন তা হয়তো নয়। অনেকেই হয়তো প্রকৃত অর্থে রোগী। কিন্তু অনেকাংশেই দেখা যায়, দুশ্চিন্তা করার জন্য স্নায়বিক বৈকল্য দেখা যায়। ফলস্বরূপ পাকস্থলীর আলসার, বদহজম, অনিদ্রা, হৃদরোগ, মাথার যন্ত্রণা, পক্ষাঘাত প্রভৃতি ব্যাধি দেখা যায়।
ডেল কার্নেগি
ডেল ব্রাকেনরিডজ কার্নেগি (জন্ম: নভেম্বর ২৪, ১৮৮৮ – মৃত্যু: নভেম্বর ১, ১৯৫৫) ছিলেন একজন আমেরিকান লেখক, অধ্যাপক, ও একাধারে বিখ্যাত আত্বমোন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণমালা যেমন: সেফ-ইম্প্রুভমেন্ট, সেল্সম্যানশিপ, করপরেট ট্রেনিং, পাবলিক স্পিকিং, ও ইন্টার পার্সোনাল স্কিল-এর উদ্ভাবক। তিনি দরিদ্র মিজুরি কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি হাউ টু উইন ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স পিপলস (১৯৩৬ সালে প্রকাশিত) বইয়ের লেখক, যা আজো প্রচণ্ড জনপ্রিয় বেস্ট সেলারের মর্যাদা পায়। তিনি ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত হাউ টু স্টপ অওরিং অ্যান্ড স্টার্ট লিভিং (), লিঙ্কন দ্য আননোন এবং আরো অনেক বইয়েরও লেখক।
তাঁর বইয়ের বিশেষত্ব এই যে নিজের প্রতিক্রিয়ার ভিন্নতার মধ্য দিয়ে অন্যের ব্যবহারের পরিবর্তন আনা সম্ভব।
Title :
ডিপ্রেশান দুশ্চিন্তা ও হতাশা থেকে মুক্তির উপায়