ইনাম আহমদ চৌধুরীর ধায় গাড়ি ধূম ছাড়িতে সংকলিত হয়েছে তাঁর ভ্রমণ-সঞ্জাত অভিজ্ঞতা-সমৃদ্ধ পাঁচটি কাহিনী, যা প্রথম আলো, ইত্তেফাক ও কালের কণ্ঠের ঈদ-সংখ্যায় আগে প্রকাশিত হয়েছে। রাশিয়া-মঙ্গোলিয়ার প্রকৃতি ও মানুষের কথা নিপুণ শৈলীতে বর্ণিত হয়েছে ‘ধায় গাড়ি ধূম ছাড়ি’তে। ‘লুবার উৎস সন্ধানে’ কাহিনীতে মাতৃ-নাম-ধারিণী লুবা নদীর সন্ধানে আশৈশব অনুসন্ধিৎসার ‘ইউরেকা’ প্রাপ্তি হ’ল উত্তর-পূর্ব ভারতের নয়নাভিরাম গিরিমালায়। পাবলো নেরুদা ও আয়েন্দের দেশ চিলি ভ্রমণ আর মাচ্চু-পিচ্চু গিরি-শীর্ষে হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার সন্ধান লেখকের কাছে একটি তীর্থ-যাত্রা। সেইসব কথা বর্ণিত হয়েছে ‘চিলি-তীর্থে’। দেশ-বিদেশের রকমারি খাবার আর গল্ফ খেলা নিয়ে লেখা দুটি পাঠককে দেবে এক ভিন্নতর বিভূঁইয়ের আমেজ। ব্যক্তিগত নৈপুণ্য-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক খেলার শীর্ষতম স্থানে গল্ফের অবস্থান হলেও সে বিষয়ে প্রকাশিত এ জাতীয় কোনো তথ্যবহুল লেখা সম্ভবত বাংলাতে আগে আর কখনও বেরোয়নি। ইতোমধ্যে এই লেখাগুলো পাঠক-সমাজে হয়েছে সমাদৃত। প্রত্যেকটি রচনাই বিচিত্র এবং ভিন্ন-ধর্মী- তবে তাদের মধ্যে রয়েছে একটি বড় সাদৃশ্য। সবগুলোই পাঠক-পাঠিকাকে নিয়ে যায় নতুনের সন্ধানে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে।
ইনাম আহমদ চৌধুরী
ইনাম আহমদ চৌধুরীর জন্ম সিলেটে, ১৯৩৭ সালের ২৯শে জুন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আইন এবং পরবর্তীতে অক্সফোর্ডে স্নাতকোত্তর অধ্যায়ন করেন। ১৯৫২-৫৩ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র-সংসদের জেনারেল সেক্রেটারি থাকাকালে শহীদ মিনার নির্মাণ ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যে কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন। ছাত্রজীবনে মাসিক প্রভাতী ও ছোটগল্প সংকলন নতুন ছবি প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে মাসিক যমুনারও সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬০ সালে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে যোগদান করেন। ব্যাংককে জাতিসংঘের ‘এস্কাপ’ কমিশনের সেক্রেটারি, আই.ডি.বি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট। লন্ডনস্থ ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আই.এম.ও) নির্বাচিত সভাপতি। লন্ডনে ইকোনমিক মিনিস্টার পদে থাকাকালে লন্ডনস্থ অর্থনৈতিক প্রতিনিধিবর্গের এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। ‘ই.আর.ডি’র সচিব হিসেবে বিশ্বব্যাংক ও এ.ডি.বি’র বিকল্প গভর্নর, প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় সরকারের প্রাইভেটাইজেশন কমিশনারের চেয়ারম্যান। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অবদানের জন্যে রাশিয়া থেকে ‘লিজিয়ন অব অনার’ প্রাপ্তি। বর্তমানে কমনওয়েল্থ সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও ঢাকাবাসী সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা। বাংলাদেশ-চীন গণমৈত্রী সমিতির উপদেষ্টা। ব্যক্তিগত ভুবনে আছেন সহধর্মিণী নাগিনা এবং পুত্র নাদিম ও কন্যা ইনা ফেরিয়েল। পরিব্রজন তাঁর একটি নেশা। পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি দেশ ভ্রমণ করার বিরল সুযোগ তাঁর হয়েছে।