ঢাকা শহর অনেক পুরনাে। কিন্তু এ শহর নিয়ে লেখালেখি হয়েছে সবচেয়ে কম। স্বাধীন একটি দেশের রাজধানী হিসেবে এখন এর ওপর লেখালেখি নিশ্চয় গবেষকদের বেশি আকৃষ্ট করবে। গত এক দশকে ঢাকার ওপর লেখালেখি, আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা বিষয়ক বেশ কিছু গ্রন্থ প্রকাশ এর উদাহরণ। তবে ঢাকা বিষয়ে গবেষণার প্রধান অন্তরায় তথ্যের অভাব। আশা করি ভবিষ্যতে গবেষকরা সে অন্তরায় দূর করতে এগিয়ে আসবেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশিত হলাে চারটি প্রবন্ধের সংকলন-‘ঢাকার হারিয়ে যাওয়া ছবির খোঁজে'। প্রবন্ধ চারটিরই ভিত্তি গবেষণা এবং অনেক তথ্য এখানে ব্যবহৃত হয়েছে যা এর আগে কোনাে প্রবন্ধ বা গ্রন্থে ব্যবহৃত হয়নি।
বর্তমান সংকলনের প্রথম ও শেষ প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক সংবাদ’-এ। দ্বিতীয় প্রবন্ধটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল আমার গ্রন্থ ‘পুরনাে ঢাকার ঘরবাড়ি ও উৎসব’-এ। বইটি অনেক দিন ধরে নিঃশেষিত এবং এটি আর প্রকাশ হবে না। তাই সে গ্রন্থ থেকে এই প্রবন্ধটি এখানে সংকলিত হলাে। তৃতীয় প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘শৈলী’-তে। আমি উপযুক্ত পত্রিকা কর্তৃপক্ষ ও বর্তমান গ্রন্থের প্রকাশককে ধন্যবাদ জানাই।
মুনতাসীর মামুন
মুনতাসীর মামুনের জন্ম ১৯৫১ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে এম. এ.. পিএইচ. ডি. ডিগ্রি লাভ করেছেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক। লেখালেখি করছেন ১৯৬৩ সাল থেকে। ছাত্রজীবনে জড়িত ছিলেন ছাত্র-আন্দোলনে এবং ১৯৬৯ সাল থেকে এ-পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেছেন প্রতিটি সাংস্কৃতিক ও গণআন্দোলনে। স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন সম্পাদক। একই সময়ে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি। তাঁর সম্পাদনায় প্রথম প্রকাশিত হয় ডাকসু’র মুখপত্র ছাত্রবার্তা। এছাড়াও বাংলাদেশ লেখক শিবির ও বাংলাদেশ লেখক ইউনিয়নের ছিলেন তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যথাক্রমে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সম্পাদক। ঢাকা নগর জাদুঘরের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন তিনিও একজন । এছাড়াও তিনি জড়িত বিভিন্ন একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বাংলাদেশে লেখালেখির জগতে মুনতাসীর মামুন একটি বিশিষ্ট নাম। সমসাময়িককালে তার মতাে পাঠক নন্দিত লেখক খুব কমই আছে। গল্প, কিশােরসাহিত্য, প্রবন্ধ, গবেষণা, চিত্রসমালােচনা, অনুবাদ ইত্যাদিতে তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ ও সেই সাথে রাজনৈতিক ভাষ্যে অর্জন করেছেন বিশেষ খ্যাতি । উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭০। বাংলা একাডেমী পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, ড. হিলালী স্বর্ণপদক পুরস্কার, প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৩), মার্কেন্টাইল ব্যাংক স্বর্ণপদক ইত্যাদিতে তিনি সম্মানিত। স্ত্রী ফাতেমা মামুন ছিলেন একজন ব্যাংকার ।