ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ড. মুনতাসির মানুনের নাম ঢাকা ইতিহাস চর্চার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জাড়িত। গত দু’দশকে বলতে গেলে তাঁর একক চেষ্টায় ঢাকার ইতিহাস আক্ষরিক অর্থে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, ঢাকা নিয়ে গবেষণার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে অনেককে। শুধু তাই নয়, ঢাকার ইতিহাস চর্চার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ তিনি দিয়েছেন ঢাকা নগর জাদুঘর স্থাপন করে। ঢাকা বিষয়ক তাঁর কোষগ্রন্থ ঢাকা : স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী পড়েন নি এমন ঢাকা প্রেমিক খুব কমই আছেন। গত বছর অনন্যা এর দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশ করেছে।একই ধারাবাহিকতায় অনন্যা ২০০৩ সাল থেকে প্রকাশ করছে ড. মামুনের ঢাকা বিষয়ক বিভিন্ন গ্রন্থের সংকলন, ঢাকা সমগ্র নামে। ২০০৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল ঢাকা সমগ্র-১, গত দ’দশকে মুনতাসীর মামুনের ঢাকা বিষয়ক অনেক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এসব গ্রন্থের অনেকগুলি এখন আর ছাপা নেই। তা’ছাড়া ঢাকা বিষয়ক অনেক বই লেখক নিজেই পুনর্মুদ্রণে আগ্রহী নন।সে পরিপ্রেক্ষিতেই ঢাকা সমগ্রের প্রকাশনা শুরু। এ বছর সেই ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হলো ঢাকা সমগ্র-৫, বর্তমান খণ্ডে ড. মামুন রচিত যেসব গ্রন্থ সংকলিত হয়েছে সেগুলি হলো-দেয়ালের শহর ঢাকা, ঢাকার হারিয়ে যাওয়া বইয়ের খোঁজে এবং ঢাকার মসলিন। আমরা মনে করি, ঢাকা প্রেমিকদের মনেই শুধু গ্রন্থটি আগ্রহের সৃষ্টি করবে না, ঢাকা গবেষকদের কাছেও গ্রন্থটি হয়ে উঠবে তথ্যের আকর। সূচিপত্র *দেয়ালের শহর ঢাকা *ঢাকার হারিয়ে যাওয়া বইয়ের খোঁজে *ঢাকার মসলিন *শব্দসূচি
মুনতাসীর মামুন
মুনতাসীর মামুনের জন্ম ১৯৫১ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে এম. এ.. পিএইচ. ডি. ডিগ্রি লাভ করেছেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক। লেখালেখি করছেন ১৯৬৩ সাল থেকে। ছাত্রজীবনে জড়িত ছিলেন ছাত্র-আন্দোলনে এবং ১৯৬৯ সাল থেকে এ-পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেছেন প্রতিটি সাংস্কৃতিক ও গণআন্দোলনে। স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন সম্পাদক। একই সময়ে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি। তাঁর সম্পাদনায় প্রথম প্রকাশিত হয় ডাকসু’র মুখপত্র ছাত্রবার্তা। এছাড়াও বাংলাদেশ লেখক শিবির ও বাংলাদেশ লেখক ইউনিয়নের ছিলেন তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যথাক্রমে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সম্পাদক। ঢাকা নগর জাদুঘরের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন তিনিও একজন । এছাড়াও তিনি জড়িত বিভিন্ন একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বাংলাদেশে লেখালেখির জগতে মুনতাসীর মামুন একটি বিশিষ্ট নাম। সমসাময়িককালে তার মতাে পাঠক নন্দিত লেখক খুব কমই আছে। গল্প, কিশােরসাহিত্য, প্রবন্ধ, গবেষণা, চিত্রসমালােচনা, অনুবাদ ইত্যাদিতে তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ ও সেই সাথে রাজনৈতিক ভাষ্যে অর্জন করেছেন বিশেষ খ্যাতি । উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭০। বাংলা একাডেমী পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, ড. হিলালী স্বর্ণপদক পুরস্কার, প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৩), মার্কেন্টাইল ব্যাংক স্বর্ণপদক ইত্যাদিতে তিনি সম্মানিত। স্ত্রী ফাতেমা মামুন ছিলেন একজন ব্যাংকার ।