ভূমিকা ঢাকায় বসবাস করেন এমন লোক বোধহয় খুব কমই আছেন যিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজকে চাক্ষুষ করেননি। ঢাকাবাসীর ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক ঢাকা মেডিকেল করেজ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার নীরব সাক্ষী হয়ে আছে। ৬২’-র ভাষা আন্দোলন, ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও ‘৯০ এর গণ অভ্যুত্থান -এসব ঘটনার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ। আর তাই ঢাকা মেডিক্যালকে নিয়ে রচিত আলোচ্য বইটি সময়েরই দাবি যা ডাক্তার মণিলাল ও এম,আর মাহবুবের সম্মিমলিত প্রচেষ্টায় সফল হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল প্রতিষ্ঠানের পটভূমি আমরা অনেকেই জানি না। বইতে বিষয়টি অত্যান্ত সহজ ভাষায় বর্ণিত হয়েছে। শুরুর দিনগুলি নানারকম প্রতিকূল পরিবেশ ও সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়েই পথ চলা শুরু হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ। তা পরেও চিকিৎসাকর্মীদরে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা্র কারণে এটি ধীরে ধীরে দেশের শ্রেষ্ঠ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। পাশাপাশি চলে কলেজে নতুন চিকিৎসাকর্মী তৈরির কাজ।ঢাকা মেডিকেল কেবল আগত রুগির সেবাই বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রেও ঢাকা মেডিকেল বিভিন্ন স্তরের কর্মীবৃন্দ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে বর্তমান সময়ে নানা রকম আর্থিক টানা পড়েন ঢাকা মেডিকেলের পুরনো ঐতিহ্য কিছুটা হলেও ম্লান হয়েছে। ঢাকা তথা দেশের আপামর জনগন নিশ্চয়ই আশা করে ঢাকা মেডিকেল তার ঐতিহ্য ও গৌরবকে সমুন্নত রাখুক। এরকম একটি তথ্যবহুল বই পাঠককে উপহার দেওয়ার জন্য লেখকদ্বয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এম আর মাহবুব
এম আর মাহবুব ১৫ অক্টোবর ১৯৬৯)এর পিতৃভূমি নরসিংদী জেলার মনােহরদী উপজেলার চর। আহম্মদপুরে। ব্যবস্থাপনা শাস্ত্রে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর। কর্মজীবনের শুরুটা, সাংবাদিকতার মাধ্যমে। কিছুদিন অধ্যাপনার কাজে নিয়ােজিত ছিলেন। সাহিত্য-সংস্কৃতির আত্মগত প্রাণ। পূর্ব বাংলার রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলন নিয়ে শেকড়সন্ধানী গবেষণায় তন্নিষ্ঠ। ইতােমধ্যে ভাষাসৈনিকদের জীবনী ও ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস বিষয়ক ১৬ টি গবেষণাধর্মী গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার। একই বিষয় নিয়ে প্রকাশাপেক্ষায় আছে আরও বেশ কিছু গ্রন্থ। গ্রন্থসমুদয় ভাষা-আন্দোলনের নানা অজানা তথ্য মেলে ধরেছে: ফুটে উঠেছে অনেক অশ্রুত দিক || ভাষা-আন্দোলন নিয়ে বৃহৎ ক্যানভাসে রচিত গ্রন্থে অসম্পর্শিত কথা তিনি সংগ্রহ করেছেন এবং করছেন অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে সংগ্রহ করেছেন ভাষা আন্দোলনের অনেক দুর্লভ দলিল, অপ্রকাশিত ছবি ও স্মৃতি স্মারক উদ্ধার করেছেন শত ভাষাসংগ্রামীদের গৌরবদীপ্ত অবদানের স্মৃতিকথা । ভাষা-আন্দোলন স্মৃতি সংরক্ষণ আন্দোলনেও তিনি একজন একনিষ্ঠ কর্মী। শুরুটা ১৯৮৭ সাল থেকে। সেই থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত দুই যুগ ধরে তিনি নিজেকে নিয়ােজিত রেখেছেন এই মহান কর্মযজ্ঞে। আজও পড়ছেন, লিখছেন, শিখছেন। এ কাজের স্বীকতিস্বরূপ ভূষিত হয়েছেন নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় । কর্মসূত্রে ভাষা আন্দোলন গবেষণা কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক। বাংলা একাডেমীর সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন সমাজকল্যাণ সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত।