ভারতবিভাগ (১৯৪৭, আগস্ট) এক ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ট্র্যাজেডি হিসাবে বিবেচিত। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এ ইতিহাস এক বিরল রক্তাক্ত ঘটনা। এ ট্র্যাজেডি ও তার নায়কদের নিয়ে বিচারি-বিশ্লেষণ কম হয়নি ভারত, পাকিস্তান ও পশ্চিমা বিদগ্ধজনের হাতে। সে প্রক্রিয়া এখনো চলছে। তবে বাংলাদেশের গবেষক ও ইতিহাসবিদগণের মধ্যে এ বিষয়ে আগ্রহ তুলনামূলক ভাবে কম। দেশভাগ শুধু সম্প্রদায়গত বিভাজনেই নয়, স্বাধীনতা ও মানবিক চেতনা বিভাজনেরও এক অমানবিক ইতিহাস। দেশবিভাগের উত্তরপ্রভাব তেমন পরিচয়ও রেখেছে। তাই সে ইতিহাস জানা ও বোঝা ত্রিধাবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য, জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে ইতিহাসের অতিসংক্ষেপিত বিবরণসহ বিভাজনের ঠিক-বেঠিক, যৌক্তিকতা ও সঙ্গতি-অসঙ্গতি নিয়ে মুল্যায়নধর্মী গ্রন্থ দেশবিভাগ : ফিরে দেখা এবং তা মূলত একুশ শতকের চিন্তাভাবনা ও বিবেচনায়। এখানে রয়েছে একটি বড় প্রশ্ন : দেশভাগ কতটা অনিবার্য ছিল? পাঠক এ রচনায় দেশভাগের কিছু ভিন্নমাত্রিক বিচার-ব্যাখ্যা দেখতে পাবেন। সেখানেই গ্রন্থটির বৈশিষ্ট্য।
আহমদ রফিক
প্রাবন্ধিক, কবি ও কলামিস্ট আহমদ রফিক (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯২৯) ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হিসেবে পরিচিত, তিনি প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় তার শিক্ষাজীবন বারবার বিপর্যস্ত হয়। শিল্প ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, মূলত সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন এবং বর্তমানে সম্পূর্ণ সাহিত্যকর্মে সক্রিয়। তিনি রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলা একাডেমীর ফেলো এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জীবন সদস্য। তার উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে *শিল্প সংস্কৃতি জীবন* (১৯৫৮), *আরেক কালান্তরে* (১৯৭৭), *ভাষা আন্দোলন: ইতিহাস ও তাৎপর্য* (১৯৯১) এবং *রবীন্দ্রনাথের চিত্রশিল্প* (১৯৯৬) অন্তর্ভুক্ত। কবিতাগ্রন্থের মধ্যে *নির্বাসিত নায়ক* (১৯৯৬), *বাউল মাটিতে মন* (১৯৭০), *রক্তের নিসর্গে স্বদেশ* (১৯৭৯) উল্লেখযোগ্য। সাহিত্যক্ষেত্রে তার বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৫ সালে একুশে পদক এবং কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি লাভ করেন।
Title :
দেশবিভাগ : ফিরে দেখা (প্রথমআলো বর্ষসেরা বই ১৪২০)