ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ উত্তরবাংলার গঞ্জের ডাক্তার বনবিহারী। মানুষের সেবা চিকিৎসকের জীবনের একমাত্র ব্রত, এই আদর্শে অবিচল বনবিহারী বিবাহ করেননি। গরিব দুঃখী মানুষের জন্য তাঁর দ্বার অবারিত। হঠাৎ এক রাত্রে কয়েকজন যুবকের আর্তিতে সাড়া দিয়ে বনবিহারী পৌঁছে যান খুঁটিমারির গভীর জঙ্গলে। সেখানে প্রসবযন্ত্রণায় গোঙাচ্ছে একটি বোবা মেয়ে! বনবিহারী তার প্রসবের ব্যবস্থা করেন। তারপর?... ঘটনার ঘূর্ণিপাকে অবিবাহিত বনবিহরীর কাঁধে এসে পড়ে সেই যুবতী ‘মামণি’ ও ‘সন্তান’। বনবিহারীর সঙ্গে কী সম্পর্ক তৈরি হয় মামাণির?... বনবিহারীর চারিপাশের স্থির, নিস্তরঙ্গ জীবন অস্থির হয়ে উঠল। কেন?.... কেন পুলিশ ঘনঘন যাতায়াত শুরু করল তাঁর কাছে?... খুঁটিমারির জঙ্গলের ওই যুবকেরা কারা, যারা মামণিকে ফেলে উধাও হয়ে গেলিল? বনবিহারী রহনা দেন সুন্দরবনের রামগঙ্গায়। একটি এন. জি. ও তে চাকরি নিয়ে। তারপর?... সমরেশের অনন্য কলমে ‘দাউ দাউ আগুন’ এই অগ্নিগর্ভ সময়ের পটভূমিতে স্ফুরিত মানবিকতা ও মূল্যবোধের টানটান মহৎ উপন্যাস।
সমরেশ মজুমদার
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪।
তাঁর শৈশব এবং কৈশাের কেটেছে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের চা বাগানে। লেখাপড়ায় মন বসতাে না একদমই। ইচ্ছে ছিল নায়ক হবেন। তাই জলপাইগুড়ির বন্ধুদের নিয়ে সাজাতেন নাটকের দল। বাজারের জন্য দিদিমার দেয়া টাকা বাঁচিয়ে তাও খরচ করতেন বন্ধুদের নিয়ে। ষােলাে বছরের এক তরুণ সমরেশ কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। ভর্তি হন স্কটিশ চার্চ কলেজে, বাংলায়। এখানেও শুরু হলাে থিয়েটার আর নাটক লেখা, গল্প লেখার কাজ। নাটক লিখলেও নাটক হতাে না। অভিনয়ও জমছে না ঠিকমতাে। ততদিনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাসের সার্টিফিকেট জুটলাে কপালে। কিন্তু নায়ক হওয়ার স্বপ্ন আর পূরণ হলাে না। এবার নাটক বাদ। গল্প লেখায় সময় ব্যয়। ১৯৭৬ সালে দেশ পত্রিকায় ছাপা হলাে তাঁর প্রথম উপন্যাস দৌড়। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। প্রকাশিত গ্রন্থ ২১৫।
সমরেশ মজুমদার ১৯৮২ সালে পান ‘আনন্দ পুরস্কার'। কালবেলা উপন্যাসের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান ১৯৮৪ সালে।