ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ পলাশের সঙ্গে পা চালিয়ে হাঁটতে লাগলাম। বুকের ভিতর কিন্তু ভূতের ভয়টা রয়েই গেছে। সন্ধ্যার মুখে মুখে বাঁশবাগানটার ওদিকটায় এসেছি। কী রকম গা ছমছমে একটা পরিবেশ বাঁমবাগানে। পলাশের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে আড়চোখে একবার বাগানটার দিকে তাকিয়েছি। ঝিঁঝিপোকা ডাকছে। ঝিঁঝিপোকার ডাক ছাড়া অন্যকোনও শব্দ নেই। তবে বাগানটার দিকে তাকিয়ে আমার মনে হলো ছায়ার মতো কারা যেন বাঁশের এক ঝাড় থেকে আরেক ঝাড়ের দিকে চলাফেরা করছে। একেবারেই ছায়া। চোখের পলকে আছে, চোখের পলকে সরে যাচ্ছে। এদিকটায় কোনও বাড়িঘর নেই। বাস্তার ধারে বাঁশবন আর তিনদিকে ফসলের মাঠ। বিশাল বাঁশবন পেরিয়ে অনেকটা দূর গেলে তারপর মানুষের ঘরবাড়ি। নয়নদের বাড়িটা হচ্ছে গ্রামে ঢোকার পর তৃতীয় বাড়ি। আমি আড়চোখে বাঁমবাগানের দিকে তাকিয়েছি এটা খেয়াল করল পলাশ। আমার কাঁধে হাত দিয়ে বলল, ভয়ের কিছু নেই। আমি আছি না সঙ্গে। চল চল, তাড়াতাড়ি হাঁট। খেয়েদেয়ে তাড়াতাড়িই ফিরবো আমরা। বেশিরাত করবো না। বেশিরাত করে ফিরলে বাবার হাতে ধোলাই খেতে হবে। আমি ভূতে ভয় পাই না, বাবাকে খুব ভয় পাই।
ইমদাদুল হক মিলন
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫ বিক্রমপুরে জন্ম। প্রথম গল্প। ‘বন্ধু’ ১৯৭৩। প্রথম উপন্যাস যাবজ্জীবন ১৯৭৬। বাংলাদেশে সাহিত্যের পাঠক সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা। তিন পর্বের দীর্ঘ উপন্যাস ‘নূরজাহান’ কালজয়ী সাহিত্য হিসেবে গণ্য। দেশ বিদেশে বহু পুরস্কারে সম্মানিত। বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৯২। তাকেশি কায়েকো মেমােরিয়াল এশিয়ান রাইটারস লেকচার সিরিজে বাংলা ভাষার একমাত্র লেখক হিসেবে অংশগ্রহণ ২০০৫। ভারতের আইআইপিএম সুরমা চৌধুরী স্মৃতি আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার ২০১২।