একটি রহস্যময় বই আর রুম নম্বর ২০৪। প্যারাসাইকোলোজি কীভাবে কাহিনির স্তরে স্তরে সাজানো যায়, গল্পের বুনন কীভাবে সেই রহস্যের ধূম্রজালকে আরো জটিল করে তুলতে পারে, তার গাঁথুনি দেখতে পাওয়া যায় গল্পটির ছত্রে ছত্রে। চুনমুখো চাঁদনীর মধ্যে সুন্দরবনের শীত রাতে যে ঘটনা ঘটে গেল তা কেবল কল্পনায় নির্মাণ করা সম্ভব নয়। ফাইল সই, নগরীয়, আমিরুল ও একটি বিল বোডর্, ব্যাচেলর্স হোম, ভাবি যখন আহমেদকে খুঁজে পেল, শাহীমুনের প্রেম-পুরুষ কিংবা প্রতিটি গল্পের আদল, উপমা, প্রতীকী রূপ এক অভাবিত বিচিত্র ভিন্নসুরে ছাপিয়ে গেছে একে অন্যকে। বলা যায়, এই গল্প সংকলনের নয় কাহিনি শুধু কাহিনি নয়। মানবচরিত্রে আঙিনায়, অলিন্দে, অন্দরমহলে যেভাবে উঁকি মেরেছেন গল্পকার জামাল উদ্দীন, তার উদাহরণ খুব সহজদৃষ্ট নয়। যে মানসিক জটিলতায়, বিস্ময় ও বিপন্নতায় টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এই নয়টি কাহিনিকে, তার নেপথ্যে রয়েছে যেসব মনস্তত্ত্বÑ তার নিপুণচিত্রের প্রকাশ এই গল্পগ্রন্থের মতো আর কি কোথাও হয়েছে? পাঠকের কল্পনার ফানুস এসব গল্পপাঠের ভেতর দিয়ে উড়তে থাকবে বিচিত্র রহস্যময় সব আসমানে। পাঠককে আহ্বান জানাই সেই অদেখা আকাশে অবারিত ডানায় ভেসে বেড়াবার।
জামাল উদ্দিন
গল্পকার জামাল উদ্দীনের লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ ছোটবেলা থেকেই। লিটল ম্যাগাজিন আর দৈনিক পত্রিকার সাময়িকী পাতায় প্রকাশ নব্বই দশকের শুরুতেই। নিজস্ব লিখনশৈলী, চিন্তা-চেতনায় ব্যতিক্রম, স্বকীয়তা আর বিষয়Ñবৈচিত্র্যে ভরা গল্পের জন্য পাঠক সমাদৃত। জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কর্তৃক সদস্য লেখক সম্মাননা প্রাপ্ত। যুক্ত ছিলেন লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা আর কথাসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে। দেশে জাতীয় পর্যায়ে প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধের গল্প উৎসবের আহ্বায়ক ছিলেন। মঞ্চে গল্প উপস্থাপনার নতুন মাধ্যম ‘স্টোরি থিয়েটার’সহ গল্পের নানা ফর্ম নিয়েও কাজ করেছেন। পেশায় সাংবাদিক। কাজ করছেন দৈনিক ইত্তেফাকে, অর্থনৈতিক সম্পাদকের পদে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা আর নেতৃত্বেও ছিলেন বিভিন্ন সংগঠনে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ২০১৬ মেয়াদের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।