লোকসংগীত শ্রুতি ও স্মৃতিনির্ভর। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল ফোক মিউজিক কাউন্সিল বা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত সংস্থা লোকসংগীত নামের পাশাপাশি 'ট্র্যাডিশনাল মিউজিক' বা 'প্রাচীন ঐতিহ্যভিত্তিক সংগীত' ব্যবহারে মতামত প্রদান করায় বাউল, ভাটিয়ালি, পল্লিগীতি, জাহাঁগিরি, মাইজভাণ্ডারি, কবিগান, আঞ্চলিক গান প্রভৃতি অর্থাৎ প্রাচীন ঐতিহ্যভিত্তিক সকল গানও গানও লোকসংগীতের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই মতামত প্রদান করার কারণে আন্তর্জাতিক লোকসংগীত সংস্থার নামও পরিবর্তন হয়ে 'ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ট্র্যাডিশনাল মিউজিক'-এ পরিণত হয়েছে। এই গ্রন্থে শ্রুতি ও স্মৃতিনির্ভর গানের পাশাপাশি প্রাচীন ঐতিহ্যভিত্তিক সংগীতকে লোকসংগীত বিবেচনা করা হয়েছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের ১০৮ জন লোককবি সম্পর্কে বর্ণনা ও তাঁদের গান এই গ্রন্থে উপস্থাপন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের লোকসাহিত্যের অন্যতম শাখা চট্টগ্রামের লোকসংগীতের ইতিবৃত্ত নির্মাণে, তার গুরুত্ব-চরিত্র-বৈশিষ্ট্য অনুধাবনে, চট্টগ্রামের লোকসমাজের সুখ-দুঃখ ও আনন্দ-বেদনার চিত্রায়ণে, এই লোকসমাজের বিশ্বাস-দর্শন-চেতনার স্বরূপ উন্মোচনে এই গ্রন্থটি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। চট্টগ্রামের লোকসংগীতের সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও এই গ্রন্থটি উল্লেখযোগ্য চিহ্নিত হবে বলে আমরা মনে করি।