চৌদ্দ থেকে সতেরশ শতকের মধ্যে পূর্ববঙ্গের সাধারণ কৃষকদের মুখে মুখে রচিত হয়েছিল অসংখ্য কাহিনিকাব্য বা পালা। তৎকালীন সমাজ, ইতিহাস, যুদ্ধ, মানুষের দুঃখদুর্দশা, ধর্মীয় সম্প্রীতি, মানব-মানবীর প্রেম, নারীর আত্মত্যাগসহ মানবজীবনের নানা ঘটনা নিয়ে ছড়াপাঁচালির ঢঙে মুখে মুখে পালাগুলাে রচনা করতেন তারা। পরে গায়েনের দল সুরারােপ করে গ্রামে গ্রামে গেয়ে বেড়াত। এসব পালাই ছিল গ্রামবাংলার মানুষের বিনােদনের অন্যতম মাধ্যম। পরবর্তীকালে শ্রীদীনেশচন্দ্র সেনের সংকলন ও সম্পাদনায় চার খণ্ডে প্রকাশিত হয় পূর্ববঙ্গ গীতিকা। এই চার খণ্ডে অন্তর্ভুক্ত পালাগুলাে থেকে নির্বাচিত আটাশটি পালা নিয়ে ছােটদের পূর্ববঙ্গ গীতিকার গল্প। গল্পগুলাে ছােটদের উপযােগী ভাষায় এবং সংক্ষেপে রচিত। পূর্ববঙ্গ গীতিকার এসব পালা বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। রেডিও, টেলিভিশন, মােবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ইলেকট্রনিক খেলনা সামগ্রী, অভিভাবকের অসচেতনতাসহ নানা কারণে বর্তমান প্রজন্ম বইবিমুখ। ছােটদের মানসিক উৎকর্ষের জন্য বই পাঠের বিকল্প নেই। ছােটদের পূর্ববঙ্গ গীতিকার গল্প হতে পারে তাদের মানস গঠনের উপযােগী একটি অনন্য বই।
স্বকৃত নোমান
স্বকৃত নােমান প্রতিশ্রুতিশীল ঔপন্যাসিক। জন্ম ১৯৮০ সালের ৮ নভেম্বর, ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বিলােনিয়ায়। জ্ঞান অন্বেষণ ও শিল্পসৃষ্টিকে জীবনের প্রধান কাজ মনে করেন। স্বভাবে অন্তর্মুখী, আবেগপ্রবণ, যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক। রাজনটী উপন্যাসের জন্য এইচএসবিসি-কালি ও কলম কথাসাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার উপন্যাস বেগানা, হীরকডানা ও কালকেউটের সুখ পাঠকনন্দিত। বর্তমানে তিনি সাপ্তাহিক সংবাদ ম্যাগাজিন এই সময়-এর সহযােগী সম্পাদক হিসেবে ঢাকায় কর্মরত। স্ত্রী নাসরিন আক্তার নাজমা ও মেয়ে নিশাত আনজুম সাকিকে নিয়ে তার ব্যক্তিগত জীবন ।